যেখানে একবার যেয়ে মন ভরে না!
যেখানে একবার যেয়ে মন ভরে না!
মদমহেশ্বর ট্রেক
মদমহেশ্বর এর গল্পটা শুরু অনেক আগে, সেই মহাভারতের যুগে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে জয়লাভ করতে কৌরবদের হত্যা করলেন পঞ্চপান্ডব, কিন্তু এতে করে তারা ভাই হত্যা ও ব্রাহ্মণ হত্যার মত গুরুতর পাপে পাপী হলেন। অনেক রক্ত ঝরিয়ে যুদ্ধ তো একসময় শেষ হল, কিন্তু পান্ডব ভাইয়েরা নিজেদের মনের শান্তি হারিয়ে ফেললেন চিরতরে।
স্বজনদের হাতে রাজ্য পরিচালনার ভার ছেড়ে দিয়ে পাঁচ ভাই বেড়িয়ে পড়লেন শিব এর খোঁজে। উদ্দেশ্য তার আশীর্বাদ নিয়ে কিছুটা হলেও মনের শান্তি ফিরে পাওয়া। অনুশোচনার আগুন দগ্ধ হয়ে কিছুটা হলেও পাপমোচন। প্রথমেই তারা গেলেন কাশী। কারন এটাই শিবের ধাম নামে পরিচিত, এখানেই আছে অসংখ্য শিব মন্দির। কিন্তু শিব তাদের কেবলি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন, এরকম ভয়ংকর পাপবিদ্ধ মানুষকে আশীর্বাদ করা সম্ভব নয় তার পক্ষে।
কাশী তে শিব কে না পেয়ে তারা গেলেন গাড়োয়াল হিমালয়ে, সেখানে দুই পাহাড়ের মাঝামাঝি দাড়িয়ে তারা দেখলেন গুপ্ত কাশীর কাছাকাছি এক বিশাল ষাড়। পঞ্চপান্ডবের এক পান্ডব ভীম দর্শনমাত্র চিনে ফেললেন যে এই ষাড়ের ছদ্মবেশে লুকিয়ে আছেন স্বয়ং শিব! তড়িৎ ছুটে যেয়ে তিনি ষাড়ের লেজ ও পেছনের পা জড়িয়ে ধরলেন।
শিব তৎক্ষণাৎ হাওয়ায় মিলিয়ে যান, এবং খন্ডবিখন্ড হয়ে পুনরায় আবির্ভুত হন। কেদারনাথে তার কুজ আবির্ভুত হয়, বাহুদ্বয় তুঙ্গনাথ এ, চেহারা রুদ্রনাথ এ, চুল ও মাথা কল্পেশর এ এবং নাভি ও পেট আবির্ভূত হয় মদমহেশ্বর এ। পান্ডব ভাইয়েরা এই পাচজায়গাতেই মন্দির স্থাপন করে, যা এখন পাচকেদার নামে তীর্থস্থান হিসেবে সুপরিচিত।
এই পাচকেদার এর অন্যতম এক কেদার হল মদমহেশ্বর।
মন্দির এ তীর্থ দর্শন ছাড়াও আর একশ্রেনীর লোক আসে এই বরফ শীতল পাথুড়ে ভূমিতে বহু পথ মাড়িয়ে, তারাও তীর্থ দর্শনেই আসে, কিন্তু তাদের তীর্থ হল পাহাড়, প্রকৃতি। ধর্মীয় মিথ কে ছাপিয়ে এই পাহাড়ের এক আলাদা আকর্ষনী শক্তি আছে, যা ট্রেকারদের টেনে নিয়ে আসে এই পথে, বারবার।
মদমহেশ্বর এর পুরো ট্রেক যেন হিমালয়ের সবটুকু সৌন্দর্য্য বুকে জড়িয়ে স্থানু হয়ে আছে এখানটায়। কি নেই এই পথে, তুষার ঢাকা বিশাল সব শুভ্র পাহাড়, নীল জলের সরোবর, আর আদিগন্ত বিস্তৃত চোখ ধাঁধানো সবুজ, আছে মেঘ পাহাড়ের মিতালি।
উপর থেকে মদমহেশ্বর এর চিত্র
মন্দির থেকে চৌখাম্বা পিক এর দৃশ্য
মদমহেশ্বর গঙ্গা নদী।
বনতলী তে গঙ্গা ও স্বরস্বতী নদীর মিলন স্থল
মদমহেশ্বর সমতল থেকে ৩৪৯৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। তাই এই ট্রেকে যেতে হলে মনোবল এর পাশাপাশি উচ্চতায় মানিয়ে নেয়ার ও ব্যাপার আছে। অপরদিকে, এই মন্দির বছরে মাত্র ৬ মাস খোলা থাকে ( মে থেকে অক্টোবর), তাই যাওয়ার আগে এই বিষয়গুলো একটু খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে যাওয়া উচিৎ হবে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ মন্দির অ্যাংকর ভাট (কম্বোডিয়া)
বিশ্বের সর্বোচ্চ ধর্মীয় স্থাপনায় কাসাব্ল্যাংকা’র এর গ্র্যান্ড মস্ক হাসান মসজিদ (মরক্কো)
বিশ্বের ঐতিহ্যস্থান হিসেবে খ্যাত হাম্পি সাম্রাজ্যে-বিজয়নগর
মিশর-পিরামিড ও মমির ইতিহাস:
শাহজাহান-মমতাজের প্রেমকাহিনী ও তাজমহলের ইতিহাস
ইংল্যান্ডের এক চিরন্তন রহস্য “স্টোনহেঞ্জ”
রহস্যঘেরা পাপল নিষিদ্ধ নগরী – ফরবিডেন সিটি বেইজিং
মায়া সভ্যতার এক বিস্ময়কর নগরী- চিচেন ইৎজা (মেক্সিকো)
রহস্যে ঘেরা ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান বা ঝুলন্ত বাগান (ইরাক)
প্রকৃতির অপার বিস্ময়কর ও ভয়ংকর সৌন্দর্যের আরেক নাম নায়াগ্রা জলপ্রপাত (আমেরিকা)
চীনের মহাপ্রাচীর (গ্রেট ওয়াল অব চায়না) এর ইতিহাস:
Undiscovered Southeast Asia : Hidden Treasures of Remote Towns and Secret Beaches
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন