দাম্পত্য সম্পর্কের বিষয়ে যা আপনার জেনে রাখা প্রয়োজন
দাম্পত্য সম্পর্কের বিষয়ে যা আপনার জেনে রাখা প্রয়োজন
ভালোবাসাই নারী ও পুরুষের মাঝে হৃদয়ের অটুট বন্ধন তৈরি করে দেয়। তৈরি করে সাংসারিক বন্ধন। ভালোবাসা ছাড়া কোনো সাংসারিক কিংবা দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না।পারস্পারিক যোগ্যতা আর ভালোলাগা থেকে জন্ম নেয় ভালোবাসা। ভালোবাসার শুভ পরিণতি ঘটে বিয়ের মাধ্যমে। ঠিক যেনো এমন করে গানের কথায় প্রকাশ পায় প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে আর দাম্পত্যের সম্পর্ক।
কাজ জীবনের অপরিহার্য অংশ। জীবনের প্রয়োজনে আমাদের কাজ করা লাগে। কাজ মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে।কর্মক্ষেত্রেই যদি আপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা নিঃশেষ করে ফেলেন, তাহলে আপনার দাম্পত্য জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। তবে, অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কাজে অনীহা তৈরি হয়। ভর করে হতাশা। এই হতাশা ঘনীভূত হতে হতে এক সময় তৈরি হয় গাঢ় বিষণ্নতা। কর্মক্ষেত্র আবেদন হারায়। ভালো লাগে না অফিসে যেতে। কর্মক্ষেত্রের এই বিষণ্নতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ব্যক্তিজীবনেও-
আপনার উৎফুল্ল আচরণ হতে পারে আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর জন্য খুব দামি একটি উপহার। ছুটির দিনগুলোকে নষ্ট হতে দেবেন না। ছুটি উপভোগ করুন। পারলে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুন। একঘেয়ে কর্মজীবন আর ব্যক্তিজীবনের টানাপড়েন থেকে অল্প একটু অবকাশ উদযাপন মনে প্রশান্তি এনে দেয়। জীবনে মাঝে মাঝে বৈচিত্র্য আনাটা ফলদায়ী।
কাউকে একইসাথে ভালোবাসা এবং ঘৃণা করা আপনার জন্য অসম্ভব নয়।সম্পর্কে প্রতারিত হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের কান্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরকম ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে হলো তা জানার চেষ্টাও করি না। রিলেশনশিপ কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে ঘটনার সময়ে আপনাদের মধ্যে কি কি ধরনের সমস্যা চলছিল, সম্পর্কে দূরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছিল কি না, আপনি বা আপনার সঙ্গী মানসিক অবসাদে বা একাকিত্বে ভুগছিলেন কিরা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এতে একে অপরকে ক্ষমা করার মত মানসিকতা তৈরী হবে।
আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর ব্যাপারে বন্ধুদের কাছে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন বন্ধুদের প্রতিক্রিয়া আপনার দাম্পত্য সম্পর্কে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
দাম্পত্য জীবনে তা-ই নিয়ম যা দুইজনের পছন্দের ভিত্তিতে ঘটে। সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয়, দাম্পত্য জীবনওসুখের মধ্য দিয়ে কাটছে। যদি বিশ্বাস ভেঙে যায়, তাহলে সেই বিশ্বাসজোড়া দেয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ইউপযুক্ত সময়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয়থাকে না।
সাময়িক ঝগড়া বিবাদের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় না। মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ আর যন্ত্রণাই দাম্পত্য জীবনকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়।
সমপর্কে অবনতি হওয়া:দাম্পত্য সম্পর্ক, “কী পেলাম?” –এর হিসেবে মেলানোর জন্য নয়। বরং সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে “কী দিতে পেরেছি,” তা-ই দাম্পত্য সম্পর্কের মূলকথা। ক্রমাগত মানসিক চাপের ফলে বিষণ্ন কর্মজীবীর অন্যদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়। ক্লায়েন্টদের সঙ্গে আর আগের মতো আন্তরিকতা কাজ করে না। সহকর্মীদের সঙ্গেও তাই। এর ছাপ পড়ে পারিবারিক এবং ব্যক্তিজীবনেও।
“জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী হিসেবে আমি সর্বোত্তম”-এমনটি মনে হওয়া অতি আত্মবিশ্বাসের লক্ষণ। এমনটি মনে হলে নিজেকে যাচাই করুন।পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জ্ঞাপন করতে হবে। এতে বন্ধনটা সুদৃঢ় হয়। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট সীমা হিনগোরানি তেমনটাই মনে করে। দুজন দুজনের হয়ে গেছেন। তার মানে এই নয়, একে অপরের নিয়ন্ত্রক। বসের মতো তাকে অধীনস্ত কর্মীর মতো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। প্রত্যকের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
সংসারের ক্রমাগত আর্থিক সচ্ছলতা অর্থ এই নয় যে, দাম্পত্য জীবনও সুখের মধ্য দিয়ে কাটছে।
যদি বিশ্বাস ভেঙ্গে গিয়ে থাকে, তাহলে সেই বিশ্বাস জোড়া দেওয়ার সময় এখনও পার হয়ে যায়নি। এজন্য যেকোনো সময়ই উপযুক্ত সময়। তবে একজন সুন্দর মনের ওগুণের স্ত্রী সংসারকে তার নিজেরআলোয় আলোকিত করে তুলতে পারেন। সাজিয়ে তুলতে পারেনসংসার জীবনকে সুখের স্বর্গীয় বাগানের মতো করে। তবে এইকাজের জন্য দরকার স্বামীর স্ত্রীর প্রতি ঐকান্তিক মায়া-মমতা ওসুগভীর ভালোবাসা। স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের পরিপূরক। একজনকে বাদ দিয়ে অন্যজন শূন্য, ফাঁকা। ভালোবাসা থাকলে দেখবেন, বিবাহিত জীবনে সুখ কাকে বলে!
রোমান্স টিকিয়ে রাখুন :অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা নিয়ে তর্ক হয় তা আসল বিষয় থাকে না। বিয়ে বেশ কিছু দিন পর নাকি রোমান্স মরে যায়। আসলে আর আগের মতো থাকে না। কিন্তু একে টিকিয়ে রাখতে হবে। কিছু অন্তরঙ্গ সময় কাটান। একজন আরেকজনের প্রতি মনোযোগ দিন। দুজন মিলে কিছু চমৎকার সময় অতিবাহিত করুন। এমন সময় কাটান যেনো একজন অপরজনের কাছে স্পেশাল হয়ে ওঠেন।
ভালোবাসা কেবল অনুভুতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশা ও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়।জীবনে কাজ জরুরি। তবে জীবনের চেয়ে বেশি জরুরি না। বিষণ্নতা মানুষকে শারীরিক ও মানসিক– উভয়ভাবে আক্রান্ত করে। কাজ করার জন্যে আপনারমনোদৈহিক সুস্থতা অত্যন্ত প্রয়োজন। সুস্থতা না থাকলে কিন্তু চাকরিও থাকবে না। তাই সুস্থ থাকতে হবে দেহ এবং মনে।
আপনি যে পেশার মানুষ হন না কেন,পাশাপাশি কারো সন্তান কিংবা পিতা, কারো বন্ধু, কারো স্বামী অথবা স্ত্রী, কারো ভালোবাসার মানুষ। কাজের জন্যে আপনার জীবন নয়, জীবনের জন্যে কাজ।
আপোস করা দারুণ বিষয় :
দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়ত এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।অনেকেই মনে করেন, আপোসে গেলে দুর্বলতা প্রকাশ পায়। এটা বড় ধরনের ভুল ধারণা। জীবনের বিভিন্ন সময় নিজেদেরই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে উভয়পক্ষকে মধ্যমপন্থ অবলম্বন করতে হবে। সমস্যা থাকলে আপোস একমাত্র সমাধান হয়ে ওঠে। অযথা বিতর্ক টেনে নিয়ে যাবেন না। ছাড় না দেওয়ার মানসিকতাও ত্যাগ করুন।
জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনীর প্রতি আপনার গভীর মনোযোগ পরস্পরের জন্য হতে পারে অমূল্য উপহার।
অনেক সময় সুখী দম্পতিরাও ভাবেন যে, তারা ভুল মানুষটিকে বিয়ে করেছেন।
আপনার জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী আপনাকে সুখী করার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও তিনি আপনার সুখী হওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সাহায্য করতে পারেন।
মিথ্যা বলে হয়ত সামান্য কিছু সুবিধা পান। কিন্তু পরিমাণে মিথ্যা বলার জন্য সুবিধার চেয়ে অনেক বেশি চড়া মূল্য দিতে হয়। অতএব, মিথ্যা বলা বর্জন করুন।
আপনার মতামত যে সবসময় সঠিক, এমনটি ভাববেন না।
বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস আপনি গড়ে তুলেছেন, তা এক মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অপরাধবোধকে দীর্ঘায়িত করে তার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে আপনি যা পেতে চান, তা কখনোই পাবেন না। এটা আসল বলার চেয়ে করা অনেক কঠিন। বিশেষ করে স্ত্রীর পরিবারের লোকজন বা স্বামীর পরিবারের মানুষের সঙ্গে যদি সুসম্পর্ক স্থাপন করা যায়, তবে দুজনের সম্পর্কও অনেক ভালো হবে। এদের নিয়ে মাঝে মাঝে ডিনারে যান। বাড়ির অনুষ্ঠানে একসঙ্গে হোন। এতে করে দুজনের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে।
আপনার যদি মনে হয়, ‘তুমিই আমার জন্য সঠিক মানুষটি, যাকে আমি বিয়ে করেছি’, তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন।
কোনোকিছু প্রমাণ করতে যাওয়ার প্রলোভনকে দমন করতে পারলে, বস্তুত আপনি অনেক কিছুই প্রমাণ করতে পারলেন।
আত্মিক উদারতা একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রধান ভিত্তি। অসঙ্গতি নিয়ে কথা বলুন: সংসার জীবনে যেসব জায়গায় অসঙ্গতি বোধ করছেন, তা নিয়ে সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন। কীভাবে সমস্যা কাটানো যায় তা নিয়ে দুজনে পরামর্শ করুন। এ বিষয়ে নিজের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ থাকলে নিঃসঙ্কোচে খুলে বলুন। কোনো প্রসঙ্গে অমত থাকলে কিংবা কোনো নির্দিষ্ট কাজে অপারগ হলে- সেটাও জানিয়ে দিন।
সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি কোনো রক্ষণাত্মক আচরণ করে, তাহলে তার রক্ষণাত্মক হওয়ার পক্ষে আপনিও কিছু কারন দেখাতে পারেন।
বিয়ে কোন ৫০/৫০ সম্ভাবনা না; বরং এটি হলো ১০০/১০০। ভালোবাসা কেবল অনুভূতি নয়; বরং আমাদের কাজের মাধ্যমেইভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। বেশি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মনের হতাশাও অতৃপ্তিকে বাড়িয়ে দেয়। দাম্পত্য জীবনের অনেক তর্কই হয়তএড়িয়ে যাওয়া যায় না। তবে ক্ষতিকর বিতর্ককে এড়িয়ে যেতেই হবে।
দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনি কোনোকিছু এখনও পরিশোধ করতে পারেন আবার পরেও পারেন। তবে যতদেরিতে তা করবেন, ততবেশি জরিমানা আপনাকে দিতে হতে পারে।
সুন্দর বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা প্রয়োজন। এমনটি করতে পারলে, আপনি আপনার ত্যাগের চেয়ে ভোগই বেশি করতে পারবেন।
ক্ষমা কোন সাময়িক গুণ নয়; বরং ক্ষমা একটি চলমান প্রক্রিয়ার নাম। আপনারা কি একে অপরকে ক্ষমা করতে প্রস্তুতঃ সম্পর্কে প্রাতরিত হবার পর যদি এমন পরিস্থিতি আসে যে আপনারা সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখতে চান তাহলে সবার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনার সঙ্গী যে কাজটি করেছে তাতে আপকি তাকে মন ক্ষেকে ক্ষমা করতে পারবেন কি না? বা সেই মন থেকে অনুতপ্ত কি না? যদি উত্তর হ্যা হয়ে থাকে তবে অতীত কে ভুলে গিয়ে সম্পর্কেরন একটি নতুন শুরু করাটাই সবচেয়ে উত্তম।
বিশ্বাসযোগ্যতা বিশ্বাসযোগ্যতার জন্ম দেয় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার অভ্যাস গড়ে তোলে।
আপনার সঙ্গীর অতীত সম্পর্কে জানুনঃ
যদিও সম্পর্কের প্রারম্ভে অনেকেই এই অতীব জরুরী বিষয়টিকে এড়িয়ে যান তবুও যদি কোন কারণে আপনার সঙ্গী আপনার সাথে প্রতারনা করে থাকে তাহলে তাকে দ্বিতীয় বারের মত সুযোগটি দেওয়ার আগে একবার তার অতীত সম্পর্কে খোজ খবর নিন। যদি অতীতেও সে এমনটা করে থাকে তাহলে তাকে দ্বিতীয় বার সুযোগ দেওয়ার মানেটা হবে আরেকবার প্রতারণা করার সুযোগ করে দেওয়া। যতক্ষন না সে নিজে কারো দ্বারা প্রতারিত হচ্ছে, সে থামবে না।
প্রতারণার কারণটি খুজে বের করুনঃ
অনেক পুরোন সম্পর্কে যখন কেউ প্রতারিত হয় তখন অবশ্যই এর কারণ সম্পর্কে জানার চেষ্টার করা উচিত। সঙ্গীকে দোষ না দিয়ে নিজেকে দোষি ভাবুন ও একবারের জন্য আপনার সঙ্গীর দৃষ্টি থেকে দেখার চেষ্টা করুন। এ থেকে আপনি কেন প্রতারিত হলেন তার উত্তর এবং ভবিষ্যতে যাতে এধনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার সমাধান দুটোই খুজে পাবেন।
নিজেকে প্রশ্ন করুনঃ
প্রতারণার কারণ সুস্পষ্ট হলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করাটাই সর্বোত্তম। তবে যদি কোন যুক্তিগত কারণ না থাকে তাহলে বুঝতে হবে যে এটা আপনার সঙ্গীর অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এঅবস্থায় সে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাবে না এর কোন নিশ্চয়তা নেই। সেক্ষেত্রে আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনি কি করতে চান? মনের উপর জোর দিয়ে কিছু করবেন না। এতে ভবিষ্যতে সুখ-শান্তি দুটোই নষ্ট হবে।
দাম্পত্য জীবনের কঠিন সময়গুলো আপনাকে একজন ভালো মানুষ করে তুলবে। সময় গুপ্তধনের মত। আপনি যদি সময়কে কাজে না লাগান তাহলে সেটি আপনার জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না অপরদিকে যদি আপনি সময়কে মূল্য দেন এবং কাজে লাগান তবে প্রতিটি মুহুর্ত আপনার জন্য সৌবাগ্য বয়ে নিয়ে আসবে।
বিয়ে অনেকটা রকেট উৎক্ষেপণের মতো। যখন তাতে মাধ্যাকর্ষণ টান পূর্ণ থাকে, তখন ফ্লাইট চলতে খুব সামান্য জ্বালানীর প্রয়োজন হয়।
একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদানটি কাজ করে তা হলো বিশ্বাস। বিশ্বাসের উপর ভর করেই একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং সম্পর্কে গভীরতা আসে। কিন্তু যদি কোন কারণে বিশ্বাস একবার ভেঙ্গে যায় তাহলে সেই বিশ্বাস পুনরায় অর্জন করা যুদ্ধজয়ের থেকে কম কিছু নয়। তাছাড়া বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে সম্পর্কের টিকে থাকার সম্ভাবনাও প্রায় না এর সমান। পুরুষের জন্য সবচাইতে কষ্টকর হলো যৌন প্রতারণা অপরদিকে একজন নারীর কাছে সবচেয়ে কষ্টকর হচ্ছে আবেগীয় প্রতারনা। একজন সঙ্গীর অন্যা কারো সাথে যৌনমিলনে জড়িয়ে পড়াটা যেমন প্রতারনা, জীবনসঙ্গীর অন্য কারো সাথে গভীর সম্পর্ক তৈরী হলে সেটাও প্রতারণা। সেখানে শারীরিক ঘনিষ্টতা থাকুক বা নাই থাকুক দুইটিই একইি বিষয়। উভয়ক্ষেত্রেই সম্পর্কে প্রতারিত ব্যক্তি হোক সে ছেলে বা মেয়ে কখনোই সঙ্গীর প্রতি তার পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন না। কিন্তু ব্যতিক্রম হলেও অনেকে চান পূর্বের সব ভুল গুলো শুধরে নিয়ে একে অপরকে দ্বিতীয় বারের সুযোগটি করে দিতে। যদি আপনার জীবনেও এমন কোন মুহুর্তের সম্মুখীন হতে হয় যেখানে আপনাকে সত্যিই ভাবতে হচ্ছে যে আপনি এখন কি করবেন তাহলে জেনে নিন সম্পর্কে প্রতারিত হলে আপনার করণীয় সম্পর্কে-দাম্পত্য জীবনে সাফল্য পেতে হলে, অতীতে কী হয়েছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে।
আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতা : দুজন মিলে উপার্জন করলে দুজনেরই আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতা রাখা প্রয়োজন। স্বামীর উপার্জন নিয়ে স্ত্রীর জানা উচিত। তেমনি দরকার স্ত্রীরটাও স্বামীর জানা। দুজনের সংসার যেহেতু, কাজেই স্বচ্ছতা অতি জরুরি বিষয়। বিশেষ করে নতুন বড় ধরনের খরচ বা বিনিয়োগের বিষয় আসলে এই স্বচ্ছতা ভালো কিছু হতে সহায়তা করবে।আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতা বোধকে নিজের ভেতর চেপে রাখবেন না।
বাস্তবতার খাতিরে মাঝে মাঝে নীরবতা পালন করা একটি অসাধারন উপায়।
আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছে আপনার সর্বোত্তম প্রশ্নগুলোর একটি হতে পারে, “আমি কীভাবে তোমাকে আরও বেশি ভালোবাসতে পারি?”
চাইলেই দাম্পত্য জীবনকে চিরসবুজ করে রাখা যায়। একঘেয়েমি আসার ফলেও অনেক সময় তৈরি হয় বিষণ্নতা। কাজের ধরনে হালকা বৈচিত্র্য অনেকক্ষেত্রে অবসাদ দূরীকরণে সহায়ক। পারলে নতুন কোনো দায়িত্ব নিন। নতুন কিছু করতে পারাটা মনে নতুন উদ্দীপনা এনে দেয়।
যৌক্তিক অনুমানের ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে অনুমানকে যাচাই করে নেওয়াই আবশ্যক।
মনের ইচ্ছা বা উদ্দেশ্যই সবকিছু নয়, কিন্তু তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি। চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনুন: নিজেকে দাস না ভেবে বরং একটি বৃহত্তরপ্রক্রিয়ার অংশ ভাবুন। ভেবে দেখুন আপনার ভূমিকা সামগ্রিকভাবে মানুষের ওপর, সমাজের ওপর, দেশের ওপর কী ভূমিকা রাখছে। কাজের মাধ্যমে আপনিকিন্তু শুধু নিজের জন্যে নয়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমস্ত পৃথিবীর জন্যে কোনো না কোনোভাবে একটা অবদান রাখছেন। এ পৃথিবীতে আপনার ভূমিকা নগণ্যহতে পারে, কিন্তু অদরকারী নয়!
সার্থক যৌন সম্পর্ক সার্থক দাম্পত্য সম্পর্কের নিশ্চয়তা দেয় না। তবে তা সার্থক দাম্পত্য সম্পর্ক নির্মাণে সহায়তা করে।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করলে তা দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষতি করবে না। তবে সন্দেহজনক বিষয় নিয়ে লুকোচুরি করলে তা দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষতি করবে।
মিথ্যা বলে হয়ত সামান্য কিছু সুবিধা পান। কিন্তু পরিমাণে মিথ্যা বলারজন্য সুবিধার চেয়ে অনেক বেশি চড়া মূল্য দিতে হয়। অতএব, মিথ্যাবলা বর্জন করুন। আপনার মতামত যে সবসময় সঠিক, এমনটিভাববেন না।
বছরের পর বছর ধরে যে বিশ্বাস আপনি গড়ে তুলেছেন, তা একমুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অপরাধবোধকেদীর্ঘায়িত করে তার অনুভূতি নিয়ে খেলা করে আপনি যা পেতে চান,তা কখনই পাবেন না। আপনার বন্ধুদের অবহেলা করবেন না।
আপনার যদি মনে হয়, ‘তুমিই আমার জন্য সঠিক মানুষ, যাকে আমিবিয়ে করেছি’, তাহলে আপনি ঠিক পথেই আছেন। কোনোকিছু প্রমাণকরতে যাওয়ার প্রলোভনকে দমন করতে পারলে, বস্তুত আপনিঅনেক কিছুই প্রমাণ করতে পারলেন।
সঙ্গী/সঙ্গিনীকে আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা এবং ঈর্ষাপরায়ণতার জন্ম হয় ভয় থেকে, ভালোবাসা থেকে নয়।
আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি কোনোকিছুকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে, তাহলে তা আপানর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দিনের একটা বড় অংশ কাটিয়ে দিতে হয় কর্মক্ষেত্রে। অনেক সময় দেখা যায়, দিনভর আমরা কাজেই ডুবে আছি। এভাবে দিনের পর দিন কাটিয়ে দেই। এটা জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই চেষ্টা করুন কাজের বাইরে ব্যয়কৃত সময়ের পরিমাণ বাড়ানোর। নতুন কোনো শখ গড়ে তুলুন। যোগাযোগ করুন আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে। জীবনে শিথিলতা থাকা ভীষণ জরুরি।
দাম্পত্য সম্পর্কে প্রেমাবেগের প্রয়োজন কখনোই ফুরিয়ে যায় না।নতুন সম্পর্কের ঔজ্জ্বল্য সবসময়ই ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে। নীরবতাও আক্রমণাত্মক হতে পারে যখন তা অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
অধিক উত্তম হলো নিজে কীভাবে সঠিক কাজটি করতে পারেন সেদিনে মনোযোগ দেওয়া। তারপর আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী কী ভুল করেছে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া।
বিশ্বাসযোগ্যতা জন্ম দেয় এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার অভ্যাসগড়ে তোলা থেকে। আপনার স্বামী বা স্ত্রী যদি কোনো কিছুকেগুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, তাহলে তা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দাম্পত্যসম্পর্কে প্রেমাবেগের প্রয়োজন কখনই ফুরিয়ে যায় না।
তবে একজন সুন্দর মনের ওগুণের স্ত্রী সংসারকে তার নিজেরআলোয় আলোকিত করে তুলতে পারেন। সাজিয়ে তুলতে পারেনসংসার জীবনকে সুখের স্বর্গীয় বাগানের মতো করে। তবে এইকাজের জন্য দরকার স্বামীর স্ত্রীর প্রতি ঐকান্তিক মায়া-মমতা ওসুগভীর ভালোবাসা। স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের পরিপূরক। একজনকে বাদ দিয়ে অন্যজন শূন্য, ফাঁকা। ভালোবাসা থাকলে দেখবেন, বিবাহিত জীবনে সুখ কাকে বলে!
- দাম্পত্য সম্পর্কটাকে সুখময় করে তুলতে এই তো মন্ত্র!
- বিবাহের আসরে কাঁদে শুধু মেয়ে, আর মেয়ের মা-বাবা। কেন কাঁদে একটি মেয়ে?
- দাম্পত্যজীবন, অজ্ঞতা ও পরিণাম
- বাস্তবতার জীবনটা কতো কতোটা কঠিন তা আপনি প্রাথমিক অবস্থায় বুঝতে পারবেন না
- সম্পর্ক তেতো হয়ে দাঁড়ায় এরকম অন্তত সাতটি ভুল এড়িয়ে চলুন
- জীবনের যে ১০টি ব্যাপার নিয়ে আফসোস করা একেবারেই উচিত নয়
- কাকে বিশ্বাস করবেন আর কাকে করবেন না জেনে নিন ৬টি কৌশলে
- স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্যই দাম্পত্যকে মধুর করে তোলে যে ৫টি “অন্যরকম” বিষয়
- বৈবাহিক জীবনেও নিজস্বতা বজায় রাখবেন কীভাবে?
- সুন্দরী নারীর জন্য ধুমপানে বাধ্য হয় পুরুষ!
- স্বামীকে পরকীয়া মুক্ত রাখার ৮টি পরামর্শ
- ৮টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জেনে নিন দাম্পত্যে আপনি অবহেলার শিকার কিনা!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন