২০ বছর বয়সী কাইলি এখন বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ধনী মানুষ।


মার্কিন তারকা কাইলি জেনার। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন রিয়ালিটি তারকা কাইলি জেনার। ২০ বছর বয়সী কাইলি এখন বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ধনী মানুষ। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় এর মূল্য দাঁড়ায় সাত হাজার পাঁচশ অষ্টআশি কোটি উনচল্লিশ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা (৭৫৮৮৩৯৫০০০০/-)। কাইলির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ২৩ বছর বয়সে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক হয়েছিলেন।
কার্দাশিয়ান পরিবারের সচেয়ে সম্পদশালী মানুষ এখন কাইলিই। এদিকে কাইলির সৎ বোন কিম কার্দাশিয়ানের সম্পদের পরিমাণ কাইলির চেয়ে ৫৫০ মিলিয়ন কম।

অর্থনৈতিক বিষয়ক মার্কিন ম্যাগাজিন ফোর্বসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১১ জুলাই আমেরিকার আত্মনির্ভরশীল ধনী নারীদের একটি তালিকা করা হয়। যারা কিনা নিজ চেষ্টায় সমৃদ্ধ হয়েছেন। সেই তালিকায় কাইলির নাম চলে আসে ২৭ নম্বরে। এই তালিকার অন্যদের চেয়ে বয়সে সবার চেয়ে ছোট কাইলি।
জেনে নেওয়া যাক কীভাবে মাত্র ৩ বছরের মাথায় কাইলি এতো টাকার মালিক হলেন। ছেলেবেলা থেকে কাইলির মডেলিং, ফ্যাশন,সাজগোজ এসবের দিকে বেশ আগ্রহ ছিল। আকর্ষণীয় পোশাক-আশাক ও মডেলিং বিষয়ে তাকে তার বোনরা অনেক সাহায্য করতেন। আর কিম কার্দাশিয়ানতো ছিলেন কাইলির কাছে ছায়ার মতো। স্কুলে পড়াকালীন নানা রকমের অভিনয় অনুষ্ঠানে অংশ নেন, এ ছাড়া নামিদামি ম্যাগাজিন ও ফ্যাশন অনুষ্ঠানেও তার বেশ উপস্থিতি ছিল। তখন তার সমসাময়িক কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কাইলির যথেষ্ট প্রভাবও ছিল।


কাইলি বলেন, ‘আমার বয়স যখন মাত্র ছয়। তখন থেকেই আমি চোখে বেগুনি রঙের আইশ্যাডো দিতাম। মেকআপ করলে আমার নিজের মধ্যেও একটা অন্যরকম আত্মবিশ্বাস কাজ করে। কখনো ইউটিউব দেখে কখনো বা যাচাই বাছাই করে স্পেশালিস্টের কাছ থেকে মেকআপ করা শিখতাম।’
কাইলি আরও জানান, নিজের ঠোঁট নিয়ে তিনি বেশ অস্বস্তিতে ভুগতেন। তাই লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁটে এক ধরনের বিভ্রম তৈরি করতেন। জানা যায়, তার সেই লিপ লাইনার স্টাইল্টাও ইন্টারনেটে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিল।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে সাময়ীক ঠোঁট মোটা করার ইনজেকশন ব্যবহার করেন কাইলি। উদ্দেশ্য নিজেকে সুন্দর দেখানো। এ নিয়ে ইন্টারনেটে ব্যাঙ্গ রসিকতার শিকার হননি তিনি। যদিও কিছুদিন আগে সেই মোটা ঠোঁটকে স্বাভাবিকভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফর্নিয়ার একটি জুয়েলারি দোকানের সামনে কাইলি জেনার। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ ও ২০১৫ সালের দিকে ‘টাইম ম্যাগাজিন’-এ প্রভাবশালী ‘কিশোর-কিশোরী’-এর তালিকায় কাইলির নাম উঠে আসে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে তার অনুসারীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। ২০১৮ সালে এসে তার ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ইনস্টাগ্রামে সেরা অনুসরণীয় ব্যক্তির তালিকায় কাইলির স্থান দশম।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর এই বিপুল অনুসারীদেরকেই কাজে লাগান কাইলি। ২০১৫ সালে ‘কাইলি কসমেটিকস’ নামে প্রসাধনীর ব্যবসা শুরু করেন এ তারকা। কাইলি কসমেটিকসের প্রথম পণ্যটির নাম ‘কাইলি লিপ কিট’। এটি মূলত লিপস্টিক ও লিপ লাইনারের সমন্বয়ে তৈরি।

I
‘কাইলি কসমেটিকস’ এর একটি পণ্য। ছবি: সংগৃহীত

পণ্যটি যখন প্রথম বিক্রির জন্য আনা হয়, তখন মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মাথায় বিক্রির জন্য রাখা সবকটি লিপ কিট ক্রেতারা কিনে নেন। এরপর ধীরে ধীরে তিনি ফাউন্ডেশন, ব্লাশন, কনসিলার, ব্রোঞ্জার ও আই শ্যাডোসহ বেশ কিছু মেকআপ প্রসাধনী যোগ করেন তার ব্যবসায়। আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে তার প্রধান ক্রেতা নারী ও তরুণ বয়সী। মেকআপ ছাড়াও কাইলির প্রসাধনী লাইনে আরও পাওয়া যায় বিভিন্ন নকশার ফ্যাশন পণ্যও। অনলাইনে নিজের প্রসাধনীর প্রচারণা তিনি নিজেই করতেন। জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে তার। দ্রুত বেড়ে যায় বিক্রি। ফলে বছর তিনেকের মাথায় কাইলি হয়ে উঠেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনীদের একজন।

কাইলি, প্রেমিক ট্রাভিস ও তাদের একমাত্র কন্যা। ছবি: সংগৃহীত

কাইলির প্রেমিকের নাম ট্রাভিস স্কট। তিনি একজন সংগীতশিল্পী। ২০ বছর বয়সী কাইলির এক মাত্র মেয়ে নাম স্টর্মি বয়স ৫ মাস।
১৯৭৭ সালে অলিম্পিকের ডেকাথলন চ্যাম্পিয়ন চেটলিন জেনার ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ক্রিস জেনারের মেয়ে কাইলি। ১০ আগস্ট ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম তার। মডেলিংয়ের পাশাপাশি লেখালিখিতেও তার সুনাম আছে।
কাইলি জেনার তার মা ক্রিসের ক্যালেবাসে বাড়ি, ক্যালিফ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

২০০০ সালে এয়ার ফ্রান্স ফ্লাইট ৪৫৯০ দুর্ঘটনার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে কনকর্ড যুগের।

বাংলাদেশের সকল রাজবাড়ী ও জমিদার বাড়ীগুলির ইতিহাস ও বর্তমান অবস্হা কি (ভিডও সহ )