মহাসাগরতলে ১৯ শতকের দুই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ
মহাসাগরতলে ১৯ শতকের দুই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ
আরোহীসহ স্রেফ গায়েব হয়ে যাওয়া মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০-এর সন্ধান আজও মেলেনি। তবে উড়োজাহাজটির সন্ধান করতে গিয়ে অনুসন্ধানকারীরা খুঁজে পেয়েছেন ১৯ শতকে ডুবে যাওয়া দুটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষের।
গবেষকেরা বলেছেন, ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দূরে ভারত মহাসাগরের তলদেশে সন্ধান মিলেছে ধ্বংসাবশেষ দুটির। এগুলো ১৯ শতকে ডুবে যাওয়া ব্রিটিশ জাহাজ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জাহাজ দুটি চিহ্নিত করতে অস্ট্রেলীয় সমুদ্র গবেষকেরা সোনার চিত্রায়ণপদ্ধতি ব্যবহার এবং জাহাজ চলাচলের নথিপত্র নিয়ে কাজ করেছেন। সোনার হলো শব্দতরঙ্গ পাঠিয়ে প্রতিফলিত তরঙ্গের মাধ্যমে পানির তলদেশে বস্তুর অবস্থান শনাক্ত এবং পানির গভীরতা পরিমাপ করার পদ্ধতি।
২০১৪ সালের ৮ মার্চ মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০। উড়োজাহাজটিতে ২৩৯ জন আরোহী ছিল। এরপর অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও চীন ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে যৌথ অনুসন্ধান অভিযান শুরু করে। ১ হাজার ৪৬ দিন পর সমাপ্ত ঘোষণা করা হয় এই ব্যর্থ অনুসন্ধান অভিযানের। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অনুসন্ধান শুরু করে। সেই অনুসন্ধানও সমাপ্তির পথে। কিন্তু হদিস মেলেনি এমএইচ৩৭০-এর।
গবেষকেরা বলেছেন, ধ্বংসাবশেষ দুটির একটির সন্ধান মেলে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান মিউজিয়ামের সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক রস অ্যান্ডারসন বলেন, তিনটি জাহাজের যেকোনো একটি হতে পারে এটি। এগুলো হলো ওয়েস্ট রিজ, কুরিঙ্গা ও লেক অন্টারিও। এর মধ্যে ১৮৮৩ সালে ইংল্যান্ড থেকে ভারত যাওয়ার পথে ২৮ ক্রুসহ ওয়েস্ট রিজ হারিয়ে যায়। সন্ধান পাওয়া ধ্বংসাবশেষটি এই জাহাজের হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। এ ছাড়া ১৮৯৪ সালে কুরিঙ্গা ও ১৮৯৭ সালে লেক অন্টারিও ডুবে যায়।
অপর ধ্বংসাবশেষটি পাওয়া গেছে ২০১৫ সালের মে মাসে। ডিসেম্বরে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ থেকে ৩৬ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। এর কাঠামে কাঠের। রস অ্যান্ডারসন বলেন, এটি ১৯ শতকে নিখোঁজ জাহাজ ডব্লিউ গর্ডন অথবা মাগডালা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর মধ্যে ডব্লিউ গর্ডন ১৮৭৭ সালে স্কটল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। আর মাগডালা ১৮৮২ সালে ওয়েলশ থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পথে হারিয়ে যায়। জাহাজ দুটিতে ১৫ থেকে ৩০ জন ক্রু ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। সম্ভাবনার তালিকায় যে জাহাজগুলো রয়েছে, তার সবগুলোই ছিল কয়লাবাহী ব্রিটিশ জাহাজ। অসম্পূর্ণ ঐতিহাসিক তথ্যের কারণে ধ্বংসাবশেষ দুটির পরিচয় পুরোপুরি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন রস অ্যান্ডারসন।
If you go looking for a friend, you’re going to find they’re very scarce. If you go out to be a friend, you’ll find them everywhere
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন