সিলেটের এক এমপিকে হত্যা করতে লন্ডনে পরিকল্পনা! : আটক ২
সিলেটের
এক এমপিকে হত্যা
করতে লন্ডনে পরিকল্পনা!
: আটক ২
সিলেট অঞ্চলের একজন সংসদ সদস্যকে খুন করার জন্য লন্ডনে এক
ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করেছিল মো. জাহিদুল আলম কাদির নামের এক চিকিৎসক। লন্ডনে
অবস্থানরত সেই ব্যক্তি ও সিলেটের কোন সংসদ সদস্য তাদের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া
যায়নি। তবে তাদের নাম-পরিচয় বের করতে পুলিশ কাজ করছে।
সিলেট অঞ্চলের একজন সংসদ
সদস্যকে খুন করার জন্য লন্ডনে এক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি করেছিল মো. জাহিদুল আলম
কাদির নামের এক চিকিৎসক। লন্ডনে অবস্থানরত সেই ব্যক্তি ও সিলেটের কোন সংসদ সদস্য
তাদের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তবে তাদের নাম-পরিচয় বের করতে পুলিশ কাজ করছে।
এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকা
মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বিদেশি ১৫টি অগ্নেয়াস্ত্রসহ
এক চিকিৎসক ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড
ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের একটি টিম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ডা.
মো. জাহিদুল আলম কাদির ও তার স্ত্রী মাসুমা আক্তার।
তাদের কাছ থেকে ১৫ টি
আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৬২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে
রয়েছে ২২ বোরের রাইফেল ৩টি, .৩০৩ রাইফেল-১টি, .৩২ বোর রিভলবার ৪টি, .২২ রিভলবার
১টি, ৭.৬৫ পিস্তল ৫টি ও .২৫ পিস্তল ১টি। উদ্ধারকৃত গুলির মধ্যে .৩০৩ রাইফেলের ১১০ রাউন্ড,
.২২ রাইফেলের ১১০০ রাউন্ড, .৩২ রিভলবার ৩৫৮ রাউন্ড ও .২৫ পিস্তলের ৫৪ রাউন্ড।
গ্রেফতার হওয়া ডা. জাহিদুল
সিলেট অঞ্চলের একজন সংসদ সদস্যকে খুন করার জন্য কন্ট্রাক করেছে। এর আগেও সে বেশ
কিছু কিলিংয়ে অংশ নিয়েছে। পেশাদার খুনিদের কাছে যেসব অস্ত্র পাওয়া যায় সেই
অস্ত্রগুলো তার কাছে পাওয়া গেছে। তবে লন্ডেনে কার সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছে, সিলেটে
কোন এমপিকে খুনের চুক্তি করা হয়েছিল সেটা জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে
জানান মনিরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল
ইসলাম জানান, গত ১৫ মে ডা. জাহিদুল আলমকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে দুটি
পিস্তল ও আট রাউন্ড গুলিসহ আটক করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের
করা হয়। ওই মামলায় গত ৩ জুন গাবতলী এলাকা থেকে তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে একটি
বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়।
পরে গ্রেফতারকৃত মাসুমা
আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার স্বামী ডা. জাহিদুল আলমের কাছে আরো অবৈধ বিদেশি
অস্ত্রের মজুদের তথ্য জানা যায়। পুনরায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ডা. জাহিদুল আলমের স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে
ময়মনসিংহ জেলার বাঘমারা এলাকার ডা. জাহিদুল আলম কাদিরের ফ্ল্যাট হতে ১২ টি
আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৬১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি তার নিজ
বাসায় বিশেষভাবে তৈরী একটি স্টিল কেবিনেটের পেছনে লুকানো ছিল।
মনিরুল আরো জানান, ডা.
জাহিদুল আলম ২০০২ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর সরকারি বা
স্থায়ী কোনো চাকরি করতেন না। তিনি গ্রামের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চাকরি
করতেন। চিকিৎসা পেশার অন্তরালে বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধভাবে লাইসেন্সবিহীন বিদেশি
অস্ত্র সংগ্রহ করে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতেন। বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র তৈরী ও
মেরামতে বিশেষভাবে পারদর্শী তিনি।
এছাড়া বিভিন্ন যন্ত্রাংশ
ব্যবহার করে অস্ত্রের আকার আকৃতি পরিবর্তন এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও তিনি দক্ষ।
পেশাদার কিলার হিসেবে বেশ কয়েক জায়গায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগেই তাকে গত মাসে
গ্রেফতার করা হয়। ডা. জাহিদুল আলমের সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সন্ত্রাসী এবং
পেশাদার খুনিদের সখ্য রয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
তিনি আরো জানান, ডা.
জাহিদুল বেশ কিছু অস্ত্র বৈধ অস্ত্র বিক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি
খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যেসব বৈধ অস্ত্র বিক্রেতা তার কাছে অবৈধভাবে অস্ত্র বিক্রি
করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
সিলেটের এক এমপিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন লন্ডন প্রবাসী। আর এই
হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করতে ভাড়া করা হয় এক চিকিৎসক পেশাদার কিলারকে।অনুসন্ধানে
বেরিয়ে আসে হত্যা করার পরিকল্পনায় হত্যাকারীদের তালিকায় রয়েছেন সিলেটের এক জাতীয়
পার্টির এমপি।
এমন সংবাদ প্রকাশ করার মাত্র দুঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাস্টাস দিয়ে বেশ কিছু লিখেন সিলেট-২ এর জাতীয় পার্টির এমপি
ইয়াহইয়া চৌধুরী ।
তাঁর প্রদানকৃত স্ট্যাস্টাসটি আমাদের পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো :-
সমস্ত প্রশংসা সেই মহান প্রভুর, যার হাতে জীবন মৃত্যু আর তিনিই
সর্ব উত্তম হেফাজতকারী।
সিলেট বিভাগের একজন এমপি হত্যার পরিকল্পক ধরা পড়ার পর থেকে
আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন।তাই উক্ত বিষয়টা আমি একটু
পরিষ্কার করতে চাই।গত মার্চ মাস থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এব্যাপারে
কিছু তথ্য ছিল। উনারা বেশ কয়েকবার আমাকে সতর্ক করেছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সঠিক
তদন্তের মাধ্যমে কিলারদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে এখন এদেরে মূল হোতা এবং
বেনীফিসারিদে কে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
সিলেটে সব সময়ই রাজনৈতিক সম্প্রতি সৌহার্দ পূর্ণ পরিবেশ ছিল এবং
আমি বিশ্বাস করি আজও সেই পরিবেশ বিরাজমান আছে। তাই ক্ষমতায় যাওয়া বা এমপি হওয়ার
জন্য অন্য একজনকে হত্যা করা হবে এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
তবুও সময় বদলেছে সাথে সাথে বাড়ছে হিংস্রতাও, এহেন অবস্থায়
স্বার্থসিদ্ধির জন্য যে কেউ পশুর মত আচরণ করবেনা সেটাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।যাইহোক
অন্যকে হত্যা করে যারা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাদের জন্য পবিত্র এই রমাযান
মাসে আল্লাহতালার কাছে হেদায়েত ও মাগফিরাতের দোয়া করি, আর হেদায়েত যদি নসিবে না
থাকে তাহলে দেশ এবং সমাজ মানুষ এর নিরাপত্তার স্বার্থে দৃষ্টান্ত মূলক ফায়সালাকরুন।
“আল্লাহু খাইরো হাফিযাও ওয়াহুওয়া আরহামুর রাহিমিন”।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন