ইন্ডিয়ার রূপকুন্ডের 'কঙ্কাল হ্রদ' ও লোমহর্ষক এক রহস্য!
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
১৯৪২ সালে অবিভক্ত ভারতের ব্রিটিশ গার্ডরা ভারতের রূপকুন্ডে ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া একটি হ্রদের সন্ধান পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এটি প্রায় ২ মাইল উঁচুতে অবস্থিত। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা এই হ্রদের আশেপাশের যা পাওয়া গেল, সেটি দেখে গার্ডদেরই ভয়ে জমে যাবার অবস্থা। এই হ্রদের আশেপাশে শত শত মানুষের কঙ্কাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। গ্রীষ্ম আসার সাথে সাথে আরো ভয়াবহ দৃশ্যের সৃষ্টি হলো। হ্রদের জমে যাওয়া পানি গলে গিয়ে হ্রদ যত স্বাভাবিক হয়ে আসতে লাগলো, ততই হ্রদের পানির নিচে চাপা পড়ে থাকা মানুষের কঙ্কালগুলো ভেসে উঠতে লাগলো। আর সেসব এসে জমা হতে শুরু করলো হ্রদের তীরে।
১৯৪২ সালে যেহেতু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল, তাই অনেকের ভয় হলো এগুলো হয়তো মৃত জাপানি সৈন্যদের, যারা লুকিয়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিল। ব্রিটিশ সরকার অবিলম্বে একটি প্রতিনিধিদল পাঠায় সত্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে। যাই হোক, কংকালগুলো জাপানি সৈনিকদের এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো, কারণ সেগুলোর বয়স আরো অনেক বেশি বলে মনে হচ্ছিলো। এরপর থেকেই এই হ্রদের নাম দেয়া হয় ‘কঙ্কাল হ্রদ’ বা skeleton lake। একই জায়গায় এতগুলো কঙ্কাল কিভাবে এলো সেটা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা কম হয় নি। কারো মতে ভূমিধ্বস, কেউ বলেছেন মহামারী আবার অনেকের কাছে ধর্মীয় রীতির মাধ্যমে আত্মাহুতি বা উৎসর্গের ফলে এই বীভৎস ঘটনা সৃষ্টি হয়েছে। আর গত ৬ দশক ধরে রূপকুন্ডের কঙ্কাল হ্রদ এক রহস্য হয়েই ছিল।২০০৪ এ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক থেকে একদল গবেষক অবতীর্ণ হলেন রহস্য উন্মোচন অভিযানে। তারা রূপকুন্ডের কঙ্কাল হ্রদ থেকে প্রায় ৩০টির মত কঙ্কাল উদ্ধার করলেন, যেগুলোর কোনটির গায়ে তখনো কিছু মাংস ও চুলের অস্তিত্ব ছিল। আর এগুলো নিয়েই তারা রহস্য উন্মোচন শুরু করলেন। আর প্রাপ্ত তথ্য সবাইকে হতবাক করে দিল। হিসেব করে জানা গেল, কঙ্কালগুলো অনেক পুরনো, ৮৫০ সাল সময়কার। ডি এন এ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেল, এই কঙ্কালগুলো দুটি আলাদা বৈশিষ্ট্যের দলভুক্ত ছিল। একদল ছিল কোন একটি পরিবার, উপজাতীয় গোত্র অথবা নিকট সম্পর্কযুক্ত। এর বাইরে ছিল অন্যান্য লোকজন। কঙ্কালগুলোর সাথেই পাওয়া আঙটি, কাঠের তৈরি বিভিন্ন জিনিস, চামড়ার জুতো, লোহার তৈরি বর্শার মাথা বা ফলক ও বাঁশের পাত থেকে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করলেন, এই কঙ্কালগুলো ছিল একদল তীর্থযাত্রীর যারা উপত্যকার উপরে উঠছিল, তাদেরকে সহযোগিতা করছিল একদল স্থানীয় কুলি বা মালপত্রবহনকারী।রূপকুন্ড নামের এই স্থানটিতে পাথর আর বরফের বিরাট স্তূপ এখানে সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তাই গরুর গাড়ি সেসময়ে খুব ভাল একটি মাধ্যম ছিল এই জায়গাটি পাড়ি দেয়ার জন্য। স্থানীয় কিংবদন্তী অনুযায়ী, কনৌজের রাজা যশধাভাল ( Raja Jasdhaval ), তার রাণী ও পারিষদবর্গসহ নন্দীদেবীর মন্দিরে তীর্থযাত্রার জন্য গিয়েছিলেন। আজো প্রতি ১২ বছর পর পর রূপকুন্ডে নন্দী দেবীর মন্দিরে তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়।ফিরে আসা যাক ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের বিজ্ঞানীদলের কাজে। তারা কঙ্কালগুলোর খুলি পরীক্ষা করে দেখলেন, প্রায় সবাই একভাবেই মারা গিয়েছে। সবার মাথাতেই ভারি কোন কিছুর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেল। আর সেই ক্ষত পরীক্ষা করে পাওয়া গেল আরো উদ্ভট তথ্য। কোন অস্ত্রের আঘাতে এতগুলো মানুষ মারা যায় নি। গোলাকার আকৃতির ‘কোন কিছু’র আঘাতে তারা মারা গিয়েছিল। কঙ্কালগুলোর মাথা ও কাঁধ পরীক্ষা করে আরো জানা গেল, আঘাতটা এসেছে মাথার উপর দিক থেকে। সবকিছু পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা একটি অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। শত শত তীর্থযাত্রী এক ভয়াবহ শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে মারা গিয়েছিলেন। শিলাবৃষ্ট সাধারণত প্রাণঘাতী হয় না। কিন্তু কোন এক অদ্ভুত নিয়মে সেদিন হয়তো শিলাবৃষ্টির সাথে পড়া শিলাগুলোর আকার অনেক বড় ছিল। যাত্রীদের কাছে কোন ছাউনি ছিল ছিল না, যা তাদেরকে করুণ মৃত্যুর মুখোমুখি করে দেয়। আর প্রায় ১২০০ বছর আগের সেই ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আজো রূপকুন্ডের কঙ্কাল হ্রদের আশেপাশে ছড়িয়ে আছে শত শত কঙ্কাল।
১৯৪২ সালে যেহেতু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল, তাই অনেকের ভয় হলো এগুলো হয়তো মৃত জাপানি সৈন্যদের, যারা লুকিয়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিল। ব্রিটিশ সরকার অবিলম্বে একটি প্রতিনিধিদল পাঠায় সত্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে। যাই হোক, কংকালগুলো জাপানি সৈনিকদের এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো, কারণ সেগুলোর বয়স আরো অনেক বেশি বলে মনে হচ্ছিলো। এরপর থেকেই এই হ্রদের নাম দেয়া হয় ‘কঙ্কাল হ্রদ’ বা skeleton lake। একই জায়গায় এতগুলো কঙ্কাল কিভাবে এলো সেটা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা কম হয় নি। কারো মতে ভূমিধ্বস, কেউ বলেছেন মহামারী আবার অনেকের কাছে ধর্মীয় রীতির মাধ্যমে আত্মাহুতি বা উৎসর্গের ফলে এই বীভৎস ঘটনা সৃষ্টি হয়েছে। আর গত ৬ দশক ধরে রূপকুন্ডের কঙ্কাল হ্রদ এক রহস্য হয়েই ছিল।২০০৪ এ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক থেকে একদল গবেষক অবতীর্ণ হলেন রহস্য উন্মোচন অভিযানে। তারা রূপকুন্ডের কঙ্কাল হ্রদ থেকে প্রায় ৩০টির মত কঙ্কাল উদ্ধার করলেন, যেগুলোর কোনটির গায়ে তখনো কিছু মাংস ও চুলের অস্তিত্ব ছিল। আর এগুলো নিয়েই তারা রহস্য উন্মোচন শুরু করলেন। আর প্রাপ্ত তথ্য সবাইকে হতবাক করে দিল। হিসেব করে জানা গেল, কঙ্কালগুলো অনেক পুরনো, ৮৫০ সাল সময়কার। ডি এন এ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেল, এই কঙ্কালগুলো দুটি আলাদা বৈশিষ্ট্যের দলভুক্ত ছিল। একদল ছিল কোন একটি পরিবার, উপজাতীয় গোত্র অথবা নিকট সম্পর্কযুক্ত। এর বাইরে ছিল অন্যান্য লোকজন। কঙ্কালগুলোর সাথেই পাওয়া আঙটি, কাঠের তৈরি বিভিন্ন জিনিস, চামড়ার জুতো, লোহার তৈরি বর্শার মাথা বা ফলক ও বাঁশের পাত থেকে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করলেন, এই কঙ্কালগুলো ছিল একদল তীর্থযাত্রীর যারা উপত্যকার উপরে উঠছিল, তাদেরকে সহযোগিতা করছিল একদল স্থানীয় কুলি বা মালপত্রবহনকারী।রূপকুন্ড নামের এই স্থানটিতে পাথর আর বরফের বিরাট স্তূপ এখানে সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তাই গরুর গাড়ি সেসময়ে খুব ভাল একটি মাধ্যম ছিল এই জায়গাটি পাড়ি দেয়ার জন্য। স্থানীয় কিংবদন্তী অনুযায়ী, কনৌজের রাজা যশধাভাল ( Raja Jasdhaval ), তার রাণী ও পারিষদবর্গসহ নন্দীদেবীর মন্দিরে তীর্থযাত্রার জন্য গিয়েছিলেন। আজো প্রতি ১২ বছর পর পর রূপকুন্ডে নন্দী দেবীর মন্দিরে তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়।ফিরে আসা যাক ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের বিজ্ঞানীদলের কাজে। তারা কঙ্কালগুলোর খুলি পরীক্ষা করে দেখলেন, প্রায় সবাই একভাবেই মারা গিয়েছে। সবার মাথাতেই ভারি কোন কিছুর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেল। আর সেই ক্ষত পরীক্ষা করে পাওয়া গেল আরো উদ্ভট তথ্য। কোন অস্ত্রের আঘাতে এতগুলো মানুষ মারা যায় নি। গোলাকার আকৃতির ‘কোন কিছু’র আঘাতে তারা মারা গিয়েছিল। কঙ্কালগুলোর মাথা ও কাঁধ পরীক্ষা করে আরো জানা গেল, আঘাতটা এসেছে মাথার উপর দিক থেকে। সবকিছু পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা একটি অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। শত শত তীর্থযাত্রী এক ভয়াবহ শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে মারা গিয়েছিলেন। শিলাবৃষ্ট সাধারণত প্রাণঘাতী হয় না। কিন্তু কোন এক অদ্ভুত নিয়মে সেদিন হয়তো শিলাবৃষ্টির সাথে পড়া শিলাগুলোর আকার অনেক বড় ছিল। যাত্রীদের কাছে কোন ছাউনি ছিল ছিল না, যা তাদেরকে করুণ মৃত্যুর মুখোমুখি করে দেয়। আর প্রায় ১২০০ বছর আগের সেই ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আজো রূপকুন্ডের কঙ্কাল হ্রদের আশেপাশে ছড়িয়ে আছে শত শত কঙ্কাল।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন