ঈশ্বরগঞ্জে বাসরঘর থেকে ফাঁসির আসামি গ্রেফতার


ঈশ্বরগঞ্জে বাসরঘর থেকে ফাঁসির আসামি গ্রেফতার
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বাসরঘর থেকে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পালাতক ফাঁসির আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ০৩,জুলাই ২০১৮  বুধবার রাতে উপজেলার দত্তগ্রাম থেকে হত্যা মামলার আসামী মনির হোসেন (২৭) কে গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, একটি হত্যা মামলায় ৮ বছর জেলে ছিলেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের খলিলনগর গ্রামের আবদুল গফুর তালুকদারের ছেলে মনির হোসেন। এরপর ২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এর মধ্যে মামলার রায়ে মনিরসহ তিন জনের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। মনিরের বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। এরপর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
এদিকে বুধবার বিয়ে হয় মনিরের। ওই রাতে শ্বশুর বাড়িতে আয়োজন করা হয় বাসরের। কিন্তু খবর পেয়ে বুধবার রাতে বাসর ঘর থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর গুলিস্তান সিদ্দিক বাজার জুতার ফ্যাক্টরির কর্মচারী আলমগীর হোসেন কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন একদল ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। আলমগীরের সব কিছু ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিতে গেলে তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ১৯ আগস্ট কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর মো. জনি (২৬), মো. হাসান (২০) ও মনির হোসেনের (৩০) বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আদালত মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই জনি, হাসান ও মনিরের ফাঁসির রায় দেন।
এদিকে ওই হত্যাকাণ্ডের কিছুদিনের মাথায় কদমতলী থানার পুলিশ মামলার আসামি মনিরকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ ৮ বছর জেলে কাটানোর পর ২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এর মধ্যে মামলার রায় শেষে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর আদালত মনিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এলাকাবাসী জানান, কিছু দিন আগে মনির এলাকায় আসেন। এরপর মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রাম গ্রামের ইসমত আলীর মেয়ে নাজমা বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়। বুধবার তাদের বিয়ে শেষে শ্বশুর বাড়িতে বাসরের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বাসর ঘর থেকে বুধবার রাত ৩টার দিকে মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার থানায় গিয়ে দেখা যায়, মনিরের মা ও বাবার আহাজারি। হত্যা মামলাটিতে ছেলের ফাঁসির রায় হয়েছে সেটি জানতেন না বলে দাবি করেন মনিরের বাবা আবদুল গফুর তালুকদার।
নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে মনির বলেন, নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিলাম। এ জীবনে বোধয় সেটি আর হলো না।
এদিকে মনিরের স্ত্রীর বড় বোন হোসনা বেগম থানায় বসে জানান, হত্যা মামলা ও ফাঁসির রায়ের বিষয় তাদের কাছে গোপন করা হয়েছে। ৪০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বোনের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের রাতেই পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছে। এখন কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মো. সাফায়েত হোসেন বলেন, কদমতলী থানার একটি হত্যা মামলায় মনিরসহ ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। আদালত থেকে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী মনিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে ময়মনসিংহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The national flag Cambodia

world map

Schengen Visa Types & Validity- Visa Fees --Travel Insurance-statistics