হামলার ঘটনায় সমালোচিত ছাত্রলীগকে নতুন করে ‘মানুষ হওয়ার’ পরামর্শ

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নানা কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় সমালোচিত ছাত্রলীগকে নতুন করে ‘মানুষ হওয়ার’ পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
আগের দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খানসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদ ও লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্লাকার্ড দেখা যায়। এসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘শিক্ষকের মর্যাদা আজ কোথায়?’
‘এবার তোরা ছাত্র হ’, ‘শিক্ষক আজ লাঞ্ছিত কেন’
‘আমার ক্যাম্পাস কার দখলে’, ‘মূল্যবোধ আজ কোথা’ ইত্যাদি।
গত ২৭ জুন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ এই সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না।
‘রক্ত গরম হয়ে যাওয়া’ রাশেদ গত এপ্রিলের মতো আবার আন্দোলনে নামতে ছাত্রদের আহ্বান জানাচ্ছিলেন। তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে অভিযোগ করে এমনও বলেন, ‘মনে হয় তার বাপের দেশ’।
এই কটূক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে অভিযোগ তুলে রাশেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন এক ছাত্রলীগ নেতা। পাশাপাশি ৩০ জুন রাশেদের সহপাঠীদের দেয়া হয় পিটুনি। এরপর ২ জুলাই এবং সবশেষ ১৫ জুলাই পেটানো হয় ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে।
একই দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কয়েকজন শিক্ষকের জমায়েতকে ঘিরে রাখে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খানসহ কয়েকজনের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় তাদের।
আন্তর্জাতিক  সম্পর্ক বিভাগের  সহযোগী অধ্যাপক আবদুল মান্নান ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আবার তোরা মানুষ হ’।
এই শিক্ষক বলেন, ‘গতকাল শহীদ মিনারে যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজক। যারা শিক্ষকদের উপর আাঙ্গুল তুলে শাসায় তারা মানুষ নয়। এ জন্য তাদের, আবার নতুন করে মানুষ হওয়া দরকার।’
একই বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষকদের উপর আঙ্গুল তুলেছে সরকার দলীয় একটি বিশেষ সংগঠন (ছাত্রলীগ)। তারা ছাত্র কি না বা তারা তাদের সংগঠনের নীতি-আদর্শ মানে কিনা তা আমার জানা নেই। আর যারা শিক্ষকদের উপর আঙ্গুল তুলেছে তারা যে গর্হিত কাজ করেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তারা ছাত্র নামের কলঙ্ক।’
একই বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমি বলেন, ‘তানজীম স্যার আমাদের কাছে বাবার মতো। একটি ন্যায্য দাবিতে দাঁড়ানোর কারণে তাকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। ‍শুধু তার উপরে নয়; অন্যান্য যে সকল শিক্ষকরা ছিলেন তারাও লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তাদের উপর আঙ্গুল তোলার সাহস ছাত্রলীগ কোথা থেকে পায়?’
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল মধুর ক্যান্টিন হয়ে ডাকসু, কলা ভবন, অপরাজেয় বাংলা প্রদক্ষিণ করে আবার সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সায়েমা আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক শেখ সামস মোরসালিন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবাদী মিছিলেন পেছনে ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এই মিছিলের পেছনেই আবার সংগঠনটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিদার মোহাম্মদ নিজামুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবুর নেতৃত্বে প্রায় ১০-১২জন নেতাকর্মীকে যেতে দেখা যায়।
তারা এখানে কেন জানতে চাইলে প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব আমাদের। আমরা তাদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এখানে এসেছি।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The national flag Cambodia

world map

Schengen Visa Types & Validity- Visa Fees --Travel Insurance-statistics