টেলিনরকে ৮১১ কোটি টাকা জরিমানা

প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নরওয়ের বহুজাতিক টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিনরকে ৯ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার বা ৮১১ কোটি টাকা জরিমানা করেছে দেশটির প্রতিযোগিতা কমিশন। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নিজেদের প্রভাব খাঁটিয়ে বাজারে নতুন একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রবেশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে টেলিনর বলছে, এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত নয়।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের মূল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হলো টেলিনর। গ্রামীণফোনে টেলিনরের শেয়ারের পরিমাণ ৫৫ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশীয় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলকমের শেয়ার আছে ৩৪ দশমিক ২ শতাংশ। বাকি ১০ শতাংশ শেয়ার আছে বাংলাদেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। ২০০৯ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি।

বর্তমানে নরওয়েসহ বিশ্বের ৮টি দেশে টেলিনরের ব্যবসা আছে। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, মিয়ানমার, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, নরওয়ে, ডেনমার্ক ও সুইডেন। এশিয়ার পাঁচটি দেশ থেকে টেলিনরের মোট আয়ের ৪৭ শতাংশ আসে।
নরওয়ের গণমাধ্যম নিউজ ইন ইংলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিনর। দেশটিতে বর্তমানে টেলিনর ছাড়া টেলিয়া নামের আরেকটি কোম্পানি মোবাইল সেবা দিচ্ছে। সব গ্রাহক দুটি অপারেটরের কাছে থাকায় বাজার প্রতিযোগিতা নরওয়েতে তেমন নেই বললেই চলে। বিকল্পের অভাবে গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। টেলিনরের ৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক দেশটির সরকার। বাকি শেয়ার বিভিন্ন বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
নরওয়ে কমপিটিশন অথোরিটির পরিচালক লারস সোরগার্ড বলেন, নরওয়ের মোবাইল বাজারে টেলিনর তার শীর্ষ অবস্থানের প্রভাব খাঁটিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। কোম্পানিটি খুব সচেতনভাবে নরওয়েতে তৃতীয় একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। তিনি আরও জানান, নরওয়ের টেলিযোগাযোগ খাতে প্রতিযোগিতা বাড়াতে তৃতীয় অপারেটর আনার জন্য তারা কাজ করছেন। কিন্তু শীর্ষে থাকা কোনো অপারেটর যখন এভাবে বাজারে তাদের প্রভাব খাটায় সেটি প্রতিযোগিতা আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
টেলিনরের বিরুদ্ধে বাজারে অবৈধ প্রভাব খাটানোর বিষয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত চলে আসছে। ২০১২ সালে এ তদন্ত শুরু হয়। ২০১৬ সালের নভেম্বরে নরওয়েজিয়ান কমপিটিশন অথোরিটি টেলিনরকে ৯০ কোটি ৬০ লাখ ক্রোনার বা ৯৩০ কোটি টাকা জরিমানা করার কথা বলেছিল।
টেলিনর নরওয়ে তাদের বিরুদ্ধ আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বেরিট ভেন্ডসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, প্রতিযোগিতা আইন ভঙ্গের মতো কোনো কাজ আমরা করিনি। এ জরিমানার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আমরা আদালতে যাব। আবেদন করার জন্য প্রতিষ্ঠানটির হাতে ছয় মাস সময় রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The national flag Cambodia

world map

TOP 10 REASONS TO VISIT THAILAND