দেশের ৫০ লাখ যানবাহনের মধ্যে যেখানে ২০ লাখেরই কোনো ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই নতুন আইন মানে সাধারন মানুষের উপর প্রয়োগ করার নতুন ফাঁদ।

নিরাপদ সড়কের জন্য নতুন আইনের কথা বলা হচ্ছে। তাতে লাভ কী হবে? আইনের যদি প্রয়োগই না থাকে, তাহলে নতুন নতুন আইন করার মানে কী?
গত ১০ বছরে দুর্নীতি দমন, নিরাপদ সড়ক, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে ৩৭১টি নতুন আইন, বিধি, নীতি সংসদে পাস হয়েছে। কিন্তু কয়টির সঠিক প্রয়োগ হয়েছে?
সংবিধান অনুসারে, পাস হওয়া আইন ঠিকমতো প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না- তা যাচাই করার দায়িত্ব সংসদের। বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত তা হয়নি।
সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হলে পরিবহন সেক্টরের নিরাপত্তার জন্য আমাদের দেশের বিদ্যমান ‘মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩’ই যথেষ্ট। নতুন আইনের কোনো প্রয়োজন নেই। এই অধ্যাদেশে কীভাবে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়া হবে, কাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া হবে, কে গাড়ির কন্ডাক্টর হতে পারবে, ড্রাইভারের বয়স, মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতাসহ প্রায় সব বিষয়ই বলা আছে।
সমস্যা হচ্ছে, আইনের প্রয়োগে। দেশের ৫০ লাখ যানবাহনের মধ্যে যেখানে ২০ লাখেরই কোনো ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই, সমসংখ্যক ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই। পুলিশ যে এসব জানে না তা নয়। কিন্তু ওইযে, অবৈধ কর্মকাণ্ড মানেই অবৈধ উপার্জন। সেই উপার্জনের আশায়, জননিরাপত্তা কিংবা আইন তাদের কাছে কোনো ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় না।
পুলিশকে ক্ষমতা দেয়া আছে, রেজিস্ট্রেশন, রোড পারমিট বা ফিটনেস সার্টিফিকেট না থাকলে স্পটে গাড়ি আটক করার। বেপরোয়া গাড়ি চালনো কিংবা রাস্তায় প্রতিযোগিতা করলেও পুলিশ যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে।
এ ধরনের অপরাধের জন্য ড্রাইভারদের ছয়মাসের সাজা এবং ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান আছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত যাত্রীদের কয়জন এই আইনের প্রয়োগ দেখেছেন?
আইন প্রয়োগের জায়গায় যদি দুর্নীতি থাকে, তবে নতুন নতুন আইন কোনো সুফল বয়ে আনে না। সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, পুরো পরিবহণ ব্যবসাটিই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের দখলে। বেনামে তাদের সঙ্গে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
এ পরিস্থিতিতে আইনের প্রয়োগ কীভাবে করা যায় সেটাই বড় কথা। বিদ্যমান আইনেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রশ্ন হচ্ছে, প্রয়োগ করবে কে?

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The national flag Cambodia

world map

TOP 10 REASONS TO VISIT THAILAND