গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় এমপি মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ।
ঘটনার চার মাসের মাথায় রবিবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান গাইবান্ধা (সুন্দরগঞ্জ) আমলী আদালতে এ অভিযোগ পত্র ও মামলার সমস্ত আলমত দাখিল করেন। এ সময় জেলা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জালাল উদ্দিন ও সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এতে একই আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) ডা. আব্দুল কাদের খানসহ আটজনকে আসামি করা হচ্ছে। অন্য আসামিরা হলেন চার কিলার আনোয়ারুল ইসলাম রানা, শাহীন মিয়া, রাসেদুল ইসলাম ওরফে মেহেদী হাসান, কাদের খানের গাড়িচালক আব্দুল হান্নান, সাবেক এমপি কাদের খানের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) শামছুজ্জোহা সরকার, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার সরকার ও তার ভগ্নিপতি সোর্স কসাই সুবল চন্দ্র রায় ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আবু হায়দার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আট আসামির মধ্যে আব্দুল কাদের খাঁনসহ সাতজন লিটন হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক (বহিষ্কৃত) চন্দন কুমার সরকার পলাতক।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু হায়দার মো. আশরাফুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে একজন পলাতক রয়েছেন। তাকে ইন্টারপোলের সহায়তার আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫ সালের শেষ দিকে এমপি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আব্দুল কাদের খান। লিটনকে সরিয়ে রাজনীতির পথ সুগম করতেই এমন চক্রান্ত করেন কাদের। বিভিন্ন দফায় ভাড়াটে খুনিদের ১০ লাখ টাকা দেন কাদের খাঁন। হত্যাকাণ্ডে তিনটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে দুটি অস্ত্র অবৈধ।
এর আগে, হত্যার ঘটনার ১ মাস ২১ দিন পর বগুড়া জেলা শহরের গরীব শাহ ক্লিনিক থেকে কাদের খানকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর কয়েক দফা তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রথম রিমান্ডে থাকার চতুর্থ দিনে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লিটন হত্যার দায় স্বীকার করেন আব্দুল কাদের খান।
আব্দুল কাদের খাঁন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি (খাঁনপাড়া) গ্রামের মৃত্যু নয়ান খাঁনের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে বগুড়া জেলা শহরের গরীব শাহ ক্লিনিকের চার তলা ভবনের ওপর তলায় বসবাস করতেন।
প্রসঙ্গত, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে আশংকাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত সাড়ে ৭টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন