ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানি গুগলকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
- অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমে বিভিন্ন অ্যাপ ও সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল ব্যবহারে বাধ্য করার অভিযোগে এই জরিমানা
- গুগল ব্যবহারে গ্রাহককে বাধ্য না করতে ৯০ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে ইইউ
- এটি গুগলের জন্য সবচেয়ে বড় অঙ্কের জরিমানা
ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানি গুগলকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাংলাদেশি মুদ্রায় জরিমানার এই অর্থ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে)।
অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম বা ব্যবস্থার মোবাইল ডিভাইসে বিভিন্ন অ্যাপ এবং সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল ব্যবহারে ব্যবহারকারীদের বাধ্য করার অভিযোগে গুগলকে এ জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এখন পর্যন্ত এটি গুগলের জন্য সবচেয়ে বড় অঙ্কের জরিমানা।
মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুগলের এ জরিমানা ইইউর বাজেটে নেদারল্যান্ডস প্রতিবছর যে অর্থ দেয় তার সমান। শুধু তা-ই নয়, সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে গুগল ব্যবহারে গ্রাহককে বাধ্য না করতে ৯০ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে ইইউ। গুগলকে গত বছরও ইইউর জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছিল। তবে সেই জরিমানার পরিমাণ ছিল আরও কম, ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার। সব মিলিয়ে এখন গুগলকে জরিমানা দিতে হবে ৭৭০ কোটি ডলার।
ইইউ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, গুগল তাদের অ্যান্ড্রয়েড ইকোসিস্টেমে শুধু গুগলের অ্যাপ ডিফল্ট হিসেবে রাখতে ফোনের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাপ দিচ্ছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল যেসব প্রতিষ্ঠান গুগলের ক্রোম বা ক্রোম অ্যাপ তাদের ফোনে আগে থেকে ইনস্টল করত না, তাদের ফোনে প্লে স্টোর রাখার সুযোগ রাখে না গুগল।
ইইউর কমপিটিশন কমিশনার মার্গারেট ভেস্তাগার এ বিষয়ে বলেন, সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে আধিপত্য বজায় রাখতে অ্যান্ড্রয়েডে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে গুগল। এ প্রবণতা অন্য প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতার পথকে রুদ্ধ করেছে।
মার্গারেট ভেস্তাগার গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাইকে জরিমানা পরিশোধ করার জন্য ডেকেছেন। এ ছাড়া মার্গারেট পিচাইকে ঘটনাগুলোর যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। গুগল যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না করে সেদিকটাতেও নজর দিতে বলেছেন তিনি। বর্তমানে বাজারে প্রায় ৮০ শতাংশই স্মার্টফোন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলে। অ্যান্ড্রয়েড ব্যবস্থার স্মার্টফোনকে কেন্দ্র করে অনলাইন বিজ্ঞাপন বাজারের একটি বড় অংশ গুগলের দখলে রয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ই-মার্কেটারের হিসাবে, চলতি ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে মোবাইল ফোনভিত্তিক বিজ্ঞাপনের এক-তৃতীয়াংশ গুগলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এদিকে জরিমানার অর্থ পরিশোধে অস্বীকৃতি জানিয়েছে গুগল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি ইইউর জরিমানার সিদ্ধান্তকে আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করবে বলে জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র আল ভার্নি এক বার্তায় বলেন, অ্যান্ড্রয়েড সবার জন্য অনেক বেশি বিকল্প নিয়ে এসেছে। অ্যান্ড্রয়েডের কারণে বাজারে কোনোভাবেই প্রতিযোগিতা ব্যাহত হয়নি।
তবে জরিমানার সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করলেও যেসব ব্যবস্থা নিতে গুগলকে নির্দেশ দিয়েছে ইইউ, সেগুলো এড়ানো প্রতিষ্ঠানটির জন্য কঠিন হবে। ইইউ বলছে, ইউরোপে যেসব মোবাইল ফোন বিক্রি হয়, সেখানে গুগল সার্চ ইঞ্জিন ও ক্রোম ব্রাউজার রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে গুগল প্রভাব খাটায়। বিষয়টি তাদের নিজস্ব তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। বেশির ভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী এ কারণে বিকল্প সার্চ ইঞ্জিন ও অ্যাপ ব্যবহারে উৎসাহী হন না। গুগলের এমন পদক্ষেপ স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্য সার্চ ইঞ্জিন ও অ্যাপ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করে।
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন