বাংলাদেশে ১০৪ টি হজ্ব এজেন্সির বিরুদ্ধে ওমরাহ ভিসার নামে সৌদি আরবে মানব পাচারের অভিযোগ তদন্ত
বাংলাদেশে ১০৪ টি হজ্ব এজেন্সির বিরুদ্ধে ওমরাহ ভিসার নামে সৌদি আরবে মানব পাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে যাচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। অভিযোগ রয়েছে যে গত মৌসুমে ১০৪ টি এজেন্সির মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া প্রায় ১১ হাজারের বেশি লোক মেয়াদ শেষে আর দেশে ফেরেন নি। এ কারণে বাংলাদেশীদের জন্যে ওমরাহ ভিসা ইস্যু করাই বন্ধ রেখেছে সৌদি আরব। কর্মকর্তারা বলছেন তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওমরাহ ভিসা আবার চালুর চেষ্টা করলে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগে যারা ওমরাহ করতে গিয়ে ফিরে আসেননি তাদের এভাবে পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর সূত্র ধরে ১০৪টি এজেন্সিকে আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব চৌধুরী বাবুল হাসান। সাথে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে চুক্তিপত্র সহ আনুষঙ্গিক সব ডকুমেন্ট।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওমরাহ ভিসা আবার চালুর চেষ্টা করলে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আগে যারা ওমরাহ করতে গিয়ে ফিরে আসেননি তাদের এভাবে পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর সূত্র ধরে ১০৪টি এজেন্সিকে আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব চৌধুরী বাবুল হাসান। সাথে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে চুক্তিপত্র সহ আনুষঙ্গিক সব ডকুমেন্ট।
মি. হাসান বলেন, “অনেক ওমরাহ যাত্রী আসেনি। তাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অভিযোগগুলো গঠন করা হয়েছে। এখন তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট দেবে। কারণ অভিযোগ গুলো ইতোমধ্যেই এসেছে।” তবে হজ্ব মৌসুমে এজেন্সিগুলোর অনেকেই এখন সৌদি আরবে বা হজ্বে লোক পাঠানো নিয়ে ব্যস্ত, এমন পরিস্থিতিতে এ তদন্ত কতটা সফল হবে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বাংলাদেশিদের ওমরাহ ভিসা নিয়ে এ ধরনের অনিয়মের কারণে ইতোমধ্যে সৌদি সরকার দেশটির অন্তত ছটি এজেন্সির কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। পরে ওই এজেন্সিগুলোই মক্কায় বাংলাদেশ হজ্ব মিশনে বাংলাদেশি এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করে।
তবে বাংলাদেশের এজেন্সি এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ সবকিছুর জন্যে দায়ী করছে সৌদি আরবের এজেন্সিগুলোকে। যদিও এসব নেতৃবৃন্দের এজেন্সির মাধ্যমে ওমরাহ করতে গিয়ে আর ফিরে না আসার অভিযোগও রয়েছে। হজ্ব এসোসিয়েশন বা হাবের সভাপতি ইব্রাহিম বাহার বলছেন যারা চাকুরি সন্ধানে যান তারা ওমরাহ ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার এজেন্সির সহায়তায় পালিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, “ওমরাহ পালনের ৯০ ভাগ কাজ হয় সৌদি আরবে। মাত্র দশ ভাগ হয় বাংলাদেশে।” তার নিজের কোম্পানি থেকে পাঠানো ৬৭ জন ওমরাহ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি, তারা কেন আসেনি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওখানকার এজেন্সি জুলাইতে জানিয়েছে দু পরিবারের ১৫ জনের কথা।
পরে বিস্তারিত জানাতে বললেও তারা আর জানায়নি।” হজ্ব এজেন্সির বাইরে থাকা ট্রাভেল এজেন্সি অনেকগুলোর বিরুদ্ধেও একি অভিযোগ উঠেছে। এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সি বা আটাবের সভাপতি মনজুর মোরশেদ মাহবুবের এজেন্সি থেকেও যারা ওমরাহ পালন করতে গিয়েছেন তাদের মধ্যে ৭৪ জন আর ফিরে আসেননি। তবে মি. মাহবুব বলছেন এটি তাদের অনেক দেরিতে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “ তখন তো দেখেছি তার চলে এসেছে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে তারা আসেননি।
এতদিন পর কি করবো এখন আমরা।” এজেন্সিগুলো যাদের পাঠায় তাদের ফেরত আনার দায়িত্ব তাদেরই কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দায়িত্ব এজেন্সিরই। সেভাবেই ফিরে আসছে। তবে অনেকেই আছেন ৫/৬শ লোক পাঠিয়েছে কিন্তু তার একজনই ফিরে আসেনি।
” কর্মকর্তারা আশা করছেন আগামী সপ্তাহের তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া গেলে শিগগিরই ওমরাহ ভিসা আবার চালু করা সম্ভব হবে। তবে এখন হজ্ব মৌসুমে এজেন্সিগুলো প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকায় তদন্ত কার্যক্রমের সফলতা নিয়ে কিছুটা সংশয়ও রয়েছে অনেকের মধ্যে।
সুত্রঃ বিবিসি
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন