কম্পিউটার এর ইতিহাস

কম্পিউটার এর ইতিহাস


কম্পিউটার এর ইতিহাস জানতে আমাদের চলে যেতে হবে ১৯ সতকের মাঝা মাঝি সময়ে| সে সময় চলছিল শিল্প বিপ্লব| সবদিকে ছিল ম্যাকানিকাল ন্ত্রপাতির জয় জয়কার| বিশাল বিশাল যন্ত্র, কারখানা, ট্রেন, ইঞ্জিন নিমেষে হাজার মানুষের কাজ করে ফেলছে একাই| সে সময় এসব মেশিন বানাতে ইঞ্জিনিয়ার, গনিতবিদ অনেক কষ্টে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বিভিন্ন গাণিতিক সমসার সমাধান করত| তখন তারা চিন্তা করতে থাকলো মেশিন দিয়ে যদি এত ভারী ভারী কাজ করা যায় তবে কেন এমন একটা মেশিন মানানো যাবে না যেটা দিয়ে গণিত এর সমাধান করা যাবে?

সে সময় অনেক বিজ্ঞানী এই ধারণা নিয়ে নিয়ে গবেষনা শুরু করেন| এক পর্যায়ে চার্লস ব্যাবেস নামের একজন গণিতবিদ প্রথম ধারণা দেন এমন একটা যন্ত্রের, যা সত্যি সত্যি অঙক কষে ফেলতে পারত| যদিও এটা ছিল একটা বিশাল ম্যাকানিকাল ক্যালকুলেটর| ম্যাকানিকাল ঘড়ি যেভাবে কাজ করে ঠিক সেভাবেই বিভিন্ন গিয়ার টিয়ার ঘুরিয়ে একটা ইনপুটের দেওয়া হত যার সমাধানটাও বিভিন্ন সংখাযুক্ত চাকা দিয়ে প্রকাশ করা হত| এই মেশিন যখন সরকারের নজরে এলো সরকারী ভাবেই তকন এটার পেছনে ফান্ডিং করা শুরু হলো| চার্লস বাবেস্কেই দায়ত্ব দেওয়া হলো আরো উন্নত মেশিন তৈরির| যদিও সে তার জিবন দশায় তা তৈরী করতে পারেন নাই কিন্তু তার করা ডিজাইন থেকেই পরবর্তিতে তৈরী হয় ব্যেবেজ মেসিন যা লগারিদম স্কয়ার রুট এর মত অনেক কমপ্লেক্স সব গানেতিক সমাধান করতে পারত| এর পর তৈরী হয় ইলেক্ট্রনিক ম্যাকানিকাল কম্পিউটার তৈরী হয়|

যেগুলো আসলে ছিল ম্যাকানিকাল ক্যালকুলেটর শুধু ইলেকট্রিক মোটর দিয়ে চালানো হত এই যা| ওই সময়ের জন্য সেটাই চিলি বিরাট হাইটেক ব্যাপার সেপার| ধীরে ধীরে এই ম্যাকানিকাল কম্পিউটার গুলোই আরো উন্নত এবং আরো বেশি সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হতে থাকে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর প্রচেষ্টার ফলে|

শিল্প বিপ্লবের এক পর্যায়ে বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়| যেমন তেন যুদ্ধ নয় এটা ছিল দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ| তখন বিভিন্ন মিলিটারী কাজে কম্পিউটারের বেবহার বেপক হারে বাড়তে থাকে| এবং কমপিউটার গবেষণায় মনোযোগী হয়ে ওঠে দেশ গুলো| শুধু কম্পিউটার ই না সে সময় যুদ্দাস্ত্র বোমা এবং যোগাযোগ প্রযুক্তিতে প্রকার গবেষণা শুরু হয়| এবং সেই সময়ই মানুষ প্রতম বুঝতে পারে তথ্য বা ইনফরমেসন একটি শক্তি| এইসময় এলান টুরিং নামের এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী প্রথম প্রোগ্রামেবল কম্পিটার এর ধারণা দেয় এবং এক পর্যায়ে সে আর তার টিম মিলে প্রথম প্রোগ্রামেবল কম্পিটার তৈরীও করে ফেলেন|

যেটা কাজে লাগানো হত জার্মানদের আরেকটা মেকানিকাল কম্পিউটার ইনিগমা মেসিন এর ইন্ক্রিপ্ট্যাড্ কোড ডিকোড করতে| জার্মান সৈন্যরা তাদের মেসেজ আদানপ্রদান করত সাংকেতিক ভাসায়| গুপ্তকর টেলিগ্রাম টেলিফোনে আরিপেতেও কোনোই লাভ হচ্ছিল না| এই কোড এতই দুর্বোধ্য ছিল যে বড় বড় গণিতবিদেরাও তার প্যাটার্ন বের করতে পারত না বা পারলেও বহু সময় লেগে যেত| পরে এই প্রফেসর টুরিং এর আবিষ্কৃত কম্পিউটারের বদৌলতে জার্মানদের সাংকেতিক বার্তা নিমিষে পড়ে ফেলত আমেরিকান বাহিনী| ফলে সহজেই কাবু করতে শুরু করে জার্মানদের| বলা হয়ে থাকে টুরিং এর এই কম্পিউটারই ব্রিটিশ আমেরিকান দের বিজয় এনে দেয় জার্মানের বিপক্ষে| তা না হলে হয়ত পৃথিবীর ইতিহাস অন্যভাবে লিখতে হত| যাইহোক এর পর মানুষ বুঝতে পারে কম্পিউটার এর শক্তি এবং কমার্শিয়ালি কম্পিউটারে বেবহার দিন দিন বাড়তে থাকে| কিন্তু তখনকার কম্পিউটার গুলো ছিল বিশাল আকারের| মেমরি হিসাবে ব্যবহার করা হত বড় বড় টিউব| আর ডাটা স্টোর করা হত বিশাল সব টেপ ড্রাইভে|

এরপর  ট্রানজিস্টার আবিষ্কারের পর কম্পিউটার এর ব্যপক পরিবর্তন চলে আসলো| আকার যেমন কমে গেল প্রসেসিং ক্ষমতাও তেমনি বেড়ে গেল কয়েক গুন| ডাটা স্টোরেজ এর জন্য সেই সময়ের কম্পিউটার জয়েন্ট কোম্পানি, আইবিএম তেয়রী করে ডিস্ক ড্রাইভ যা দিন দিন আরো উন্নত, আকারে আরো ছোট এবং সাশ্রয় হতে থাকে| মটোরোলা এবং ইন্টেল কোম্পানি প্রসেসর গবেষণায় একেরপর এক সাফল্য নিয়ে আসতে থাকে|

এর পরের ইতিহাস খুবই সরল কম্পিউটারে আকার ছোট হতে থাকে আর ক্ষমতা বাড়তে থাকে দিন কে দিন| একসময় যে কম্পিউটার ছিল একটি ঘরের সমান কয়েক টন ছিল যার ওজন একটা প্রোগ্রাম পরিবর্তন করতে লাগত একদিন আজ তা একটা ডাবল ক্লিকের কাজ মাত্র| কম্পিউটার করেছে অসম্ভবকে সম্ভব| মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে পৃথিবীকে এনেদিয়েছে এমন পরিবর্তন যা মানব সব্ভ্য়তার এক আনন্ন দৃষ্টান্ত| আজকে কম্পিউটার সবার পকেটে তা কিন্তু শুরু হয় এপেল কম্পিটার এর জনক স্টিভ এর ভাবনা থেকে| সে প্রথম তার বন্ধুদের সাথে মিলে এপেল কোম্পানি প্রতিষ্টা করে বেক্তিগত কম্পিউটার বাজারজাত শুরু করে|

 সে সময় তার দেখাদেখি আইবিএম এর মত কোম্পানি যারা সুধু বিশাল কম্পিউটার বানাত বড় বড় প্রতিঠানের জন্য তারাও পারসনাল কম্পিউটার বানানো শুরু করে| মাইক্রোসফট নিয়ে আসে উইন্ডজ অপারেটিং সিস্টেম যা পারসনাল কম্পিউটিং কে আরেকধাপ সহজলোভ্য করে দেয় মানুসের কাছে| এরপর কমপ্যাক এইচপি এর মত কোম্পানি বাজারে পার্সনাল কম্পিউটার নিয়ে আসে অনেক কম খরচে সবার নাগালে| পৃথিবী দেখতে পায় এক নতুন ধরনের পণ্যের| সবকিছুর দাম যেখানে সময়ের সাথে বৃদ্দিপায় কম্পিউটারের দাম উল্টা কমতে থাকে সাথে আবার পারফরমেন্স উল্টা বাড়তে থাকে| এভাবে একের পর এক ইনোভেশন এর একপর্যায়ে ইন্টারনেট এর যুগের সুচনা হয় কম্পিউটার এর উপর ভর করে| যা আজকে আমাদের যোগাযোগ বেবস্থায় এনেদিয়েছে আমূল পরিবর্তন| গুগল ফেসবুকের মত কোম্পানি আজ ইন্টারনেট প্রযুক্তি কে নিয়ে গিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়| বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সাথে আজকে আমরা মাত্র এক ক্লিক দূরত্বে| আমাদের জীবন ধারা পরিবর্তন হয়ে আমরা প্রবেশ করেছি ডিজিটালে জগতে|

চিন্তা করলে কম্পিউটারের ইতিহাস খুব বেশি পুরনো না| ১০০ বছরও হয়নি কম্পিউটার এসেছে আমাদের হাতে কিন্তু এরই মধ্যে কি আমূল পরিবর্তন আমরা দেখছি| আজকের একটা স্মার্ট ফোন নাসার চন্দ্র অভিযানের এপোলো ১১ এ ব্যবহৃত কম্পিউটার থেকে ৩ থেকে ৪ হাজার গুন বেশি ক্ষমতা সম্মন্ন আর মেমরি?

 ৪০ লক্ষগুন বেশি! চিন্তা করুন আর ১০০ বছরে এই কম্পিউটার প্রযুক্তি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে| মানব সভ্যতা যন্ত্রনির্ভর| আমরা সভতার শুরু থেকে নিজেদের প্রয়োজনে অনেক রকম যন্ত্র বানিয়ে নিয়েছি| তবে যন্ত্র গুলো সবই ছিল কোনো একটি নিদৃষ্ট কাজের জন্য তৈরী| কিন্তু কম্পিউটার একমাত্র যন্ত্র যা কোনো নিদৃষ্ট কাজের জন্য না বরং মানুষ যা চিন্তা করতে পারে কম্পিউটার কে দিয়ে তাই করানো সম্ভব| বলাযায় কম্পিউটার হলো চিন্তার বাইসাইকেল| এই বাইসাইকেলে চড়ে মানব সভ্যতা কোথায় পৌছে সেটাই এখন দেখার বিষয়| আর হা এই বাইসাইকেল কিন্তু এখন আপনার হাতেও|

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The national flag Cambodia

world map

TOP 10 REASONS TO VISIT THAILAND