প্রথম কম্পিউটার তৈরী হল ৫১ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট উচু, ওজন ছিল ৫ টন । প্রয়োজন হত ৫০০ মাইল লম্বা তার।

কম্পিউটার একটি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যাহা তথ্য প্রক্রিয়া করণের কাজে ব্যবহার করা হয়। আভিদানিক অর্থে কম্পিউটার একটি হিসাবকারী যন্ত্র। যদিও হিসাবকে সামনে রেখেই কম্পিউটারের যাত্রা শুরু তথাপি আধুনিক কম্পিউটার কে শুধু হিসাবকারী যন্ত্র হিসেবে গন্য করা ঠিক হবেনা । কারণ আজকের কম্পিউটার হিসাব ছাড়াও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন- গবেষণা, চিকিৎসা, শিক্ষা, নির্মান কাজ, অফিস ব্যবস্থাপনা, সামরিক, ইত্যাদি আরও অনেক কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। পরিশেষে কম্পিউটার কে এমনভাবে সজ্ঞায়িত করা যায় যে, কম্পিউটার একটি দ্রুত গতি সম্পন্ন এবং নির্ভুল  DATA MANIPULATION ELECTRONIC SYSTEM যাহা তথ্য গ্রহন ও সংরক্ষণ করে এবং PROCESS করে নির্দেশ অনুযায়ী OUTPUT RESULT প্রদান করে।
কম্পিউটার এর উৎপত্তি
কম্পিউটার – এর আবিস্কার আর উন্নয়নের পিছনে রয়েছে মানুষের শত বছরের গবেষণা। গোনা-গুনতির ঝামেলা এড়ানোর জন্য প্রচীনকালে আবিস্কৃত হয় অ্যাবাকাস (Abacus- a wooden frame with balls strung on parallel wires ) নামের একটি গনণাযন্ত্র। এটাই হল প্রথম ডিজিটাল বা অংক ভিত্তিক গনণাযন্ত্র । কম্পিউটারের জন্মস্থান বেল ল্যাবরেটরী আর জন্মদাতা চার্লস ব্যাবেস নামক একজন বৃটিশ বিজ্ঞানী। চার্লস ব্যাবেজ ১৮১২ সালে ব্যাবেজ লগারিদম হিসাবসহ গাণিতিক হিসাবের জন্য ডিফারেন্স ইঞ্জিন এবং ১৮৩৩ সালে অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন উদ্ভাবন করেন।
 abacus2
1896 সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিখ্যাত কম্পিউটার কোম্পানী আইবিএম (IBM)। প্রথম যে মেকানিক্যাল কমপ্লেক্স ক্যালকুলেটর তৈরী করেন তার শুরু বেল-1 দিয়ে । এর পর হাটিহাটি পা পা করে এগিয়ে চলল কম্পিউটারের নতুন নতুন উদ্ভাবন। এ সময় (১৯৩৭ সলে) তৈরী হল ৫১ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট উচু কম্পিউটার মার্ক্-১ (MARK-1) এর ওজন ছিল ৫ টন । যন্ত্রাংশ সংযোগের জন্য প্রয়োজন হত ৫০০ মাইল লম্বা তার। যন্ত্রটি চালু ছিল মাত্র ১৫ বছর । তবে এখনও প্রথম কম্পিউটার হিসাবে সংরক্ষিত আছে “হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
 Mark 1
সময়কাল ১৯৪৬
আমেরিকার পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হল ত্রিশ টন ওজনের উনিশ হাজার ইলেক্ট্রনিক টিউব দিয়ে তৈরী ইনিয়াক (ENIAC- Electronic Numerical Integrator and Calculator) কম্পিউটার । এটা চালাতে বিদ্যুত খরচ হত ১৩০ কিলোওয়াট। এই মেশিনে দশ অংকের দুটি সংখ্যাকে গুন করতে সেকেন্ডের হাজার ভাগের তিন ভাগ অর্থ্যত তিন মিলি সেকেন্ড সময় লাগত।
প্রজন্মের কম্পিউটার এর পথ চলা। তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার এ শুরু হল আই(IC) চিপ দিয়ে । ফলে কম্পিউটারের আকার যেমন ছোট হয়ে এল তেমনি বিদ্যুত খরচও অনেক কমে গেল। অপরদিকে বেড়ে গেল  কম্পিউটার এর কাজ করার ক্ষমতা। ১৯৭১ সালে ইনটেল(Intel)  কোম্পানী যে মাইক্রো প্রসেসর (Micro Processor) তৈরী করে তাতে ২২০০ ট্রানজিষ্টর(TRANSISTOR) ছিল।
microprocessor and socket in motherboard
এই পর্যায়ে এসে কম্পিউটার এর ক্ষেত্রে ঘটল এব বড় ধরনের পরিবর্ত্ন। মাত্র এক ইঞ্চি চওড়া, দেড় ইঞ্চি লম্বা ও সিকি ইঞ্চি পুরু একটি চিপে বসানো হল কয়েক লাখ ট্রানজিষ্টর(TRANSISTOR)। এখন চলছে কম্পিউটার এর চার নম্বর প্রজন্ম । এ পর্যায়ে এসে পার্সোনাল কম্পিউটার এর ব্যাবহার বেড়েছে। এখন ছোট্ট টেবিলটপ (Desktop) Personal Computer এর ক্ষমতা অনেক বেশি।
কম্পিউটার এর প্রজস্ম (GENERATION OF COMPUTER)
 প্রথম প্রজন্ম (First Generation) 1945-1960 : এই কম্পিউটার এ ইলেক্ট্রনিক সার্কিটে ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করা হয় । প্রাইমারী ইন্টারনাল স্টোরজ হিসাবে ম্যাগনেটিক ড্রাম ব্যবহার করা হয়। Limited main storage and slow operating speed ছিল। স্লো ইনপুট/আউটপুট ছিল যেমন- punched card and tape ইত্যাদি। এটা অনেক গরম হত এবং চালানো একটু কষ্টসাধ্য ছিল। Payroll Processing & Record Keeping application ব্যবহার করা হত। যেমন – IBM 650, UNIVAC1, IBM 701  |
দ্বিতীয় প্রজন্ম (Second Generation) 1960-1965 : এই কম্পিউটারে ইলেক্ট্রনিক সার্কিটে ট্রানজিষ্টর ব্যবহার করা হয়। প্রাইমারী ইন্টারনাল স্টোরজ হিসাবে ম্যাগনেটিক কোর ব্যবহার করা হয়। Increased main storage Capacity ছিল। দ্রুত গতির ইনপুট/আউটপুট ছিল। Great reduction in size & heat generation ছিল । billing, Payroll Processing & updating inventory file ব্যবহার করা হত। যেমন- IBM 1401, Honeywell 400, CDC 1604, IBM 1602 ।
তৃতীয় প্রজন্ম (Third Generation) 1965-1970 : এই কম্পিউটারে ইলেক্ট্রনিক সার্কিটে আইসি (Integrated Circuit*IC*) ব্যবহার করা হয়। প্রাইমারী ইন্টারনাল স্টোরজ হিসাবে ম্যাগনেটিক কোর এবং ‍সলিড স্টেট মেইন স্টোরজ ব্যবহার করা হয়েছে। এটা অনেক দ্রুত গতির ইনপুট/আউটপুট ছিল।
চতুর্থ্ প্রজন্ম (Fourth Generation) 1971- ? : এই কম্পিউটারে Large scale & large very large scale integrated circuit(IC) ব্যবহার করা হয়েছে। এর স্টোরজ ক্যাপাসিটি এবং গতি বাড়ানো হয়েছে। মাইক্রো প্রসেসর ও মাইক্রো কম্পিউটার ব্যবহার শুরু হয়েছে। Sophisticated application program, networking facilities প্রবর্তিত হয়েছে।
কম্পিউটার কি ভাবে কাজ করে ?
কম্পিউটার তার কাজগুলিকে কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করে থাকে। ধাপগুলি নিম্নরূপ-
১।  তথ্যবলী  গ্রহন  (DATA INPUT)।
২।  তথ্যবলী সংরক্ষন  (DATA  STROGE )।
৩।  নিপুনভাবে তথ্য প্রক্রিয়া করন করে (DATA PROCESSING)।
৪। আউটপুট (OUTPUT)।
উপরোক্ত কার্যাবলী কম্পিউটার সিস্টেম এর বিভিন্ন অংশের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে যেমন নিচের এই  ব্লক ডায়াগ্রাম।
 Block Diagram
কম্পিউটারের প্রকারভেদ- (TYPES OF COMPUTER)
১। এনালগ কম্পিউটার।    (Analog Computer)
২। ডিজিটাল কম্পিউটার।   (Digital Computer)
৩। হাইব্রিড কম্পিউটার।    (Hybrid Computer)
আবার  ডিজি্টাল কম্পিউটার কে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন-
১। সুপার কম্পিউটার।       (Super Computer)
২। মেইনফ্রেম কম্পিউটার।  (Mainframe Computer)
৩। মিনি কম্পিউটার।       (Mini Computer)
৪। মাইক্রো কম্পিউটার।    (Micro Computer)
সুপার কম্পিউটার (Super Computer) হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী ক্ষমতা এবং দ্রুত গতি সম্পন্ন কম্পিউটার। এটি মুলত  (Multi-user System/Computer) এতে প্রায় ২০০ শত টার্মিনাল লাগানো যায় এবং ২০০ জন ব্যবহারকারী একসাথে একই সময়ে কাজ করতে পারে।
Super Compurter copy
মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer) ও একটি দ্রুতগতি সম্পন্ন কম্পিউটার তবে এর গতি এবং ক্যাপাসিটি সুপার কম্পিউটার এর তুলনায় কম। এটিও মুলত (Multi-user System/Computer) এতে প্রায় ৮০ টির মত টার্মিনাল লাগানো যায় এবং ৮০ জন্ ব্যবহারকারী একসাথে একই সময়ে কাজ করতে পারে।
mainframecomputers
মিনি কম্পিউটার (Mini Computer) ও একটি (Multi-user System/Computer) এতে প্রায় ১৪ টির মত টার্মিনাল লাগানো যায় এবং ১৪ জন্ ব্যবহারকারী একসাথে একই সময়ে কাজ করতে পারে। যেমন- PDP 11/45
Pdp7-oslo-2005
মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer) একটি Single User Computer অর্থাৎ একটি কম্পিউটারে শুধু মাত্র একজন লোক কাজ করতে পারে। সমস্ত পার্সোনাল কম্পিউটার মাইক্রো কম্পিউটার এর অর্ন্তগত। মাইক্রো কম্পিউটার বর্তমানে সারা বিশ্বে অত্যান্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

২০০০ সালে এয়ার ফ্রান্স ফ্লাইট ৪৫৯০ দুর্ঘটনার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে কনকর্ড যুগের।

বাংলাদেশের সকল রাজবাড়ী ও জমিদার বাড়ীগুলির ইতিহাস ও বর্তমান অবস্হা কি (ভিডও সহ )