বাংলাদেশেরও রয়েছে মৃৎশিল্পের আদি চর্চার ইতিহাস
বাংলাদেশেরও রয়েছে মৃৎশিল্পের আদি চর্চার ইতিহাস
মৃৎশিল্পের যাত্রা শুরুর ইতিহাস মানব সভ্যতা শুরুর ইতিহাসের সাথে সম্পৃক্ত। তবে এই শিল্প সম্পর্কে পনেরো হাজার বছরের তথ্য দেশের গবেষকদের কাছে রয়েছে। ভারত বর্ষসহ বাংলাদেশেরও রয়েছে মৃৎশিল্পের আদি চর্চার ইতিহাস। গত অর্ধদশকেরও বেশি সময় ধরে দেশে এই শিল্পে অনেক ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিবর্তন ঘটেছে।
সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষ তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরির উপকরণ প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করতে থাকে। তেমনি খাবার ও পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করার জন্য পাত্র তৈরির ধারণা থেকে মাটির ব্যবহার শুরু করে মানুষ। এমনকি নিজেদের নিরাপদে থাকা নিশ্চিত করতে মাটির ঘর তৈরির সংস্কৃতি আদিকালে বিশ্বজুড়েই ছিল। যা আজও পৃথিবীর নানাপ্রান্তে রয়েছে। তবে সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মাটি দিয়ে তৈরি পণ্য শিল্পের ছোঁয়া পেতে থাকে।
শিল্পের ছোঁয়া লাগার আগে মাটি দিয়ে সামগ্রী তৈরির যে চর্চা ও সংস্কৃতিতে মানুষ অভ্যস্ত হতে শুরু করে তখন এর নির্মাণ প্রক্রিয়াটি ছিল একেবারেই ভিন্নধাচের।
তবে কালের প্ররিক্রমায় মানুষ নিজের সৃজনশীল চিন্তাকে অব্যাহতভাবে শাণিত করে এই শিল্পের ধারাবাহিক উন্নয়ন সাধন করে। বাংলাসহ গোটা ভারতবর্ষে এক সময় মানুষের ঘরের পাশাপাশি দৈনন্দিন ব্যবহারে প্রায় সব ধরনের সামগ্রী তৈরি হত মাটি দিয়ে। এ ধরনের নির্মাণ ও শিল্পকর্মের সাথে যারা যুক্ত তারা কুমার হিসেবে পরিচিত। বংশ পরিক্রমায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পারিবারিকভাবে কুমারদের মৃৎশিল্পে হাতে খড়ি ও প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে। সমাজের যে জনগোষ্ঠি মৃৎশিল্পের সাথে আদিকাল থেকে যুক্ত তারা পাল বংশীয় হিসেবেও পরিচিত।
মাটির তৈরি জিনিসের ব্যবহারিক যাত্রা শুরুর প্রারম্ভে যারা এগুলো বানাতে পারতেন না তারা কুমারদের কাছ থেকে অন্য পণ্যের বিনিময়ে তাদের প্রয়োজনীয় মাটির সামগ্রী সংগ্রহ করতেন।
সমাজ ব্যবস্থার গোড়াপত্তনের সময় থেকেই থালা-বাসন হিসেবে মাটির তৈজসপত্র ব্যবহারের নজির মেলে। এমনকি আজকের উন্নত বিশ্বেও শস্য রক্ষণে মাটির হাড়ি-কোলার জুড়ি নেই। হাজার বছর ধরে কুমারের হাতের পরম মায়ায় টিকে থাকা মৃৎশিল্প এখন ভিন্নরূপে ফুলদানি আর টবে শোভিত হয়ে অফিস বাসার শিল্পমূল্য যোগ করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন