ফোর্বসের জরিপে সবচেয়ে বেশি আয় করা তারকাদের মধ্যে শীর্ষ দশ জনের নামের তালিকা

সবচেয়ে বেশি আয় করা বিশ্বের একশ তারকার নামের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রসিদ্ধ বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস। এ তালিকায় সালমান খান, অক্ষয় কুমারের নাম থাকলেও নেই বলিউড কিং শাহরুখ খান।

গত বছর ১ জুন থেকে চলতি বছর ১ জুন পর্যন্ত বিশ্বের তারকাদের ট্যাক্স প্রদানের পূর্বের আয়ের জরিপে তৈরি হয়েছে এ তালিকা। এবার ১০০ তারকার সম্মিলিত আয় ৬.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে এ বছর ১১ জন তারকার আয় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে।

ফোর্বসের জরিপ অনুযায়ী এই বছর সবচেয়ে বেশি আয় করা তারকা মার্কিন বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদার। তার আয় ২৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তালিকার ৭৬তম স্থানে রয়েছেন অক্ষয় কুমার। সালমান খান রয়েছেন ৮২তম স্থানে। বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এ তালিকায় থাকলেও এবার নেই শাহরুখ। ৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় নিয়ে গত বছর ৬৫তম স্থানে ছিলেন তিনি।

মেওয়েদার ২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭ সালে গ্রান্ড র‍্যাপিড , মিশিগানে একটি মুষ্টিযোদ্ধা পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা ফ্লয়েড মেওয়েদার সিনিয়র প্রাক্তন ওয়েল্টার ওয়েট প্রার্থী ছিলেন যিনি হল অফ ফেমার সুগার রে লিওনার্ড এর সাথে প্রতিযোগিতা করেছেন। তার চাচা ( জেফ মেওয়েদার ও রজার মেওয়েদার ) পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা ছিলেন , রজার মেওয়েদার যিনি বর্তমানে ফ্লয়েড মেওয়েদার এর প্রশিক্ষক হিসেবে আছেন তিনি দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিলেন এবং প্রাক্তন হল অফ ফেমার জুলিও সেজার চাভেজ, পার্নেল হুইটেকার এবং কস্টিয়া সিউজু এর সাথে লড়েছেন। মেওয়েদার এর নাম প্রথমে তার মায়ের পারিবারিক নামেই ছিল কিন্ত তার নাম পরিবর্তন করে মেওয়েদার করা হয় যখন তিনি অটোয়া হিলস হাই স্কুল থেকে তার শিক্ষাজীবনের পাট চুকান।



ফোর্বসের জরিপে সবচেয়ে বেশি আয় করা তারকাদের মধ্যে শীর্ষ দশ জনের নামের তালিকা দেয়া হলো:


১. ফ্লয়েড মেওয়েদার - ২৮৫ মিলিয়ন ডলার

বক্সিংছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image captionবক্সিং-এ সবচেয়ে বেশি আয়।

মার্কিন পেশাদার বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদারের গত বছর ট্যাক্স-পূর্ব আয় ছিল ২৮৫ মিলিয়ন ডলার। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে আইরিশ পেশাদার মিক্সড মার্শাল আর্টিস্ট কনর ম্যাকগ্রেগরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জেতার মাধ্যমে ২৭৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন মেওয়েদার।

ফ্লয়েড মেওয়েদার জুনিয়র

ফ্লয়েড মেওয়েদার জুনিয়র (জন্ম নামঃ ফ্লয়েড জয় সিনক্লেয়ার , জন্মঃ ২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭) একজন পেশাদার মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা। তিনি পেশাদার হিসেবে এখনো অপরাজিত এবং পাঁচটি ভিন্ন ওজন শ্রেণীতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ১১ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন এবং ৪ বার লিনিয়াল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে।
মেওয়েদার দুইবারের রিং ম্যাগাজিনের "ফাইটার অফ দ্য ইয়ার" (১৯৯৮ এবং ২০০৭) নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি "বক্সিং রাইটার এসোশিয়েশন অফ অ্যামেরিকা" এর দুই বারের নির্বাচিত "ফাইটার অফ দ্য ইয়ার" (২০০৭,২০১৩) এবঙ্ সেরা যোদ্ধা ইএসপিওয়াই পুরস্কার পেয়েছেন (২০০৭,২০১২,২০১৩ এবঙ্ ২০১৪)। স্পাইক টিভি মেওয়েদার কে "দ্য বেষ্ট এভার" (সর্বকালের সেরা) পুরষ্কার দিয়েছে (২০১৫)।
মেওয়েদার ডব্লিউবিসি, ডব্লিউবিএ, ডব্লিউবিও এবঙ্গ রিঙ্গ ওয়েল্টার ওয়েট চ্যাম্পিয়ন এবঙ্গ ডব্লিউবিসি সুপার, ডব্লিউবিএ এবঙ্গ রিঙ্গ জুনিয়র মিডল ওয়েট চ্যাম্পিয়ন। তাকে বিভিন্ন সঙ্গবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট সেরা পাউন্ড ফর পাউন্ড মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে অভিহিত করে যার মধ্যে আছে স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড, ইএসপিএন, বক্সরেক, ফক্স স্পোর্টস এবঙ্গ ইয়াহু স্পোর্টস। মেওয়েদার ফর্বেস এবঙ্গ স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড এর ২০১২ এবঙ্গ ২০১৩ এর সর্বচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত ৫০ খেলয়াড়ের মধ্যে শীর্ষ নির্বাচিত হয়েছেন এবঙ্গ ২০১৪ সালে আবারো শীর্ষ নির্বাচিত হন ফর্বেস এর হিসেবে। তিনি ২০০৭ সালে বব অ্যারামের টপ র‍্যাঙ্ক থেকে বের হয়ে মেওয়েদার প্রমোশন প্রতিষ্ঠা করেন।

মেসি-রোনালদোর চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি আয় মেওয়েদারের!

মেসি-রোনালদোর চেয়ে প্রায় ৫ গুণ বেশি আয় মেওয়েদারের!
পকেট থেকে এক হাজার ডলারের নোট পড়ে গেলেও নাকি বিল গেটস সেটা তোলেন না। কারণ মাটি থেকে টাকা তুলতে তাঁর যত সময় ব্যয় হয়, তার চেয়ে কম সময়েই তিনি আয় করেন এর চেয়ে বেশি। টাকা কুড়িয়ে তোলাটা তো নেহাত ‘লস’!
এটা স্রেফ একটা গল্প হতে পারে। তবে এই তথ্যে কোনো ভুল নেই, প্রতি মিনিটে বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদার আয় করেছেন ৬০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। প্রতি মিনিটে মানুষ ১৫-১৬ বার শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। অর্থাৎ প্রতিবার শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার সময় মেওয়েদারের আয় ছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা! পকেট থেকে হাজার ডলারের গন্ডা কয় নোট পড়ে গেলেও তো ফিরে তাকাবেন না মেওয়েদার!
প্রতি বছর খেলোয়াড়দের বার্ষিক আয়ের একটা হিসাব দেয় ইএসপিএন সাময়িকী। তাতেই উঠে এসেছে, ২ মে ম্যানি প্যাকিয়াওকে হারিয়ে ওয়ার্ল্ড বক্সিং অর্গানাইজেশনের খেতাবটি জেতায় এ বছরের সবচেয়ে আয় করা খেলোয়াড় হয়ে গেছেন মেওয়েদার। সেই লড়াইয়ের মোট আর্থিক মূল্য ছিল প্রায় ৫০ কোটি ডলার। যেটি কিনা ২০১৪ সালে টোঙ্গা দেশটির মোট জিডিপির সমান! ওই লড়াই জিতে আনুমানিক ২৫ কোটি ডলার আয় করেছেন মেওয়েদার। হেরে গেলেও প্যাকিয়াওয়ের পকেটেও গেছে ১৫ কোটি ডলার। 

এক লড়াই দিয়েই মেওয়েদার যা আয় করেছেন, সারা বছর খেটেখুটে ঘাম ঝরিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আয় করেন এর পাঁচ ভাগের এক ভাগ! এদিক দিয়ে লিওনেল মেসি কিছুটা সান্ত্বনা পেতে পারেন। অন্তত এ বছর রোনালদোর চেয়ে তাঁর আয় ছিল বেশি। স্বাভাবিকভাবেই এ বছরের তালিকায় প্রথম দুটো জায়গা দুই বক্সারের দখলে। এর পরই আছেন মেসি (৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলার) এবং রোনালদো (৫ কোটি ডলার)। রোনালদোর ৫ কোটি ৫ দিয়ে গুণ করলেই বেরোচ্ছে মেওয়েদারের আয়!


২. জর্জ ক্লুনি (অভিনেতা, ব্যবসায়ী)-২৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
George Clooney 2016.jpg

জর্জ টিমথি ক্লুনি (জন্ম: ৬ মে, ১৯৬১) হলেন একজন মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সমাজকর্মী। তিনি অভিনেতা হিসেবে তিনবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন এবং অভিনেতা হিসেবে সিরিয়ানা চলচ্চিত্রের জন্য একবার ও সহ-প্রযোজক হিসেবে আর্গো চলচ্চিত্রের জন্য একবার করে মোট দুইবার একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন।

ক্লুনির অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৮ সালে টেলিভিশনে অভিনয়ের মাধ্যমে। পরে তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত প্রচারিত মেডিকেল নাটক ইআর-এ ডগ রস চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই নাটকে অভিনয়ের জন্য তিনি দুইবার প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ইআর নাটকে অভিনয়ের সময় তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। সুপারহিরো চলচ্চিত্র ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন (১৯৯৭), অপরাধ-কমেডি চলচ্চিত্র আউট অফ সাইট (১৯৯৮), এবং থ্রি কিংস এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

২০০১ সালে ক্লুনির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায় তার কমেডি চলচ্চিত্র ওশান্‌স ইলেভেন ব্যবসা সফলতা লাভ করলে। পরের বছর জীবনীমূলক গোয়েন্দা চলচ্চিত্র কনফেশন অব আ ডেঞ্জারাস মাইন্ড চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি পরিচালনায় আসেন। পরবর্তীতে তিনি ঐতিহাসিক নাট্যধর্মী গুড নাইট, অ্যান্ড গুড লাক(২০০৫), স্পোর্টস কমেডি লেদারহেডস্‌ (২০০৮), রাজনৈতিক নাট্যধর্মী দি আইডিজ অব মার্চ(২০১১), এবং যুদ্ধ-নাট্যধর্মী দ্য মনুমেন্ট্‌স মেন (২০১৪) পরিচালনা করেন।

২. জর্জ ক্লুনি - ২৩৯ মিলিয়ন ডলার


জর্জ ক্লুনিছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image captionজর্জ ক্লুনি

মার্কিন অভিনেতা জর্জ ক্লুনি গত বছর যে পরিমাণ অর্থ আয় করেছেন সেটি অন্য যে কোন অভিনয় শিল্পীর তুলনায় বেশি আয়। মি: ক্লুনির এ আয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে যৌথভাবে প্রতিষ্ঠিত টেকিলা কোম্পানিতে তাঁর যে মালিকানা রয়েছে সেটির একটি অংশ বিক্রির আয়। এর মাধ্যমে তিনি আয় করেছেন এক বিলিয়ন ডলার। ২০১৩ সালে তিনি যৌথভাবে এ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ক্লুনি ২০০৫ সালে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নির্মিত থ্রিলার চলচ্চিত্র সিরিয়ানায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন এবং গুড নাইট, অ্যান্ড গুড লাক চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্যের জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। পরে ২০০৭ সালে থ্রিলারধর্মী মাইকেল ক্লেটন, ২০০৯ সালে হাস্যরসাত্মক-নাট্যধর্মী আপ ইন দ্য এয়ার, ও ২০১১ সালে দ্য ডিসেন্ডেন্ট্‌স চলচ্চিত্রের অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে এবং ২০১১ সালে দি আইডিজ অফ মার্চ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ উপযোগকৃত চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ২০১২ সালে তিনি রাজনৈতিক থ্রিলারধর্মী আর্গো চলচ্চিত্রের জন্য সহ-প্রযোজক হিসেবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি ছয়টি ভিন্ন বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেছেন।

২০০৯ সালে টাইম ম্যাগাজিন প্রকাশিত টাইম ১০০ তালিকায় "বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি"দের একজন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য প্রসিদ্ধ। তিনি ২০০৮ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে জাতিসংঘের শান্তি দূত হিসেবে নিয়োজিত
প্রাথমিক জীবন
ক্লুনি ১৯৬১ সালের ৬ই মে কেন্টাকির লেক্সিনটনে জন্মগ্রহণ করেন তার মাতা নিনা ব্রুস (ওয়ারেন; জন্ম ১৯৩৯) সিটি কাউন্সিল এর একজন সুন্দরী ছিলেন। তার পিতা নিক ক্লুনি (জন্ম ১৯৩৪) ছিলেন একজন সংবাদ উপস্থাপক ও গেম শো উপস্থাপক। তিনি এএমসি চ্যানেলে ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে পাঁচ বছর উপস্থাপনা করেন। ক্লুনির পূর্বপুরুষগণ আইরিশ, জার্মান ও ইংরেজ ছিলেন।তার প্র-প্র-প্র-প্র-পিতামহী ম্যারি অ্যান স্প্যারো ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকনের মাতা ন্যান্সি লিংকনের সৎ বোন। ক্লুনির বড় বোনের নাম অ্যাডা। তার ফুফু রোজামেরি ক্লুনি ছিলেন নামকরা কাবারে গায়িকা ও অভিনেত্রী। রোজামেরির বিয়ে হয়েছিল ডেবি বুনের সাথে এবং তাদের সন্তানেরা হলেন অভিনেতা মিগুয়েল ফেরার, রাফায়েল ফেরার, এবং গ্যাব্রিয়েল ফেরার।


প্রারম্ভিক কর্ম: ১৯৭৮-১৯৯৩ক্লুনি জেমস এ. মিশেনার রচিত সেন্টেনিয়াল উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত একই নামের টেলিভিশন মিনি ধারাবাহিকে অতিরিক্ত হিসেবে প্রথম কাজ করেন। ধারাবাহিকটির কিছু অংশ ক্লুনির নিজ শহর কেন্টাকির অগাস্টাতে চিত্রায়িত হয়। ক্লুনির প্রথম প্রধান ভূমিকায় কাজ হল ১৯৮৪ সালে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিটকম ই/আর। তিনি দ্য ফ্যাক্টস অব লাইফ ধারাবাহিকে হ্যান্ডিম্যান এবং দ্য গোল্ডেন গার্লস এর একটি পর্বে একজন গোয়েন্দা ভূমিকায় অভিনয় করেন। তার প্রথম প্রসিদ্ধ কাজ হল সিটকম রোজিঅ্যান টিভি ধারাবাহিকে অনিয়মিত পার্শ্ব ভূমিকায় রোজিঅ্যান বারের তদারককারী বুকার ব্রুকস চরিত্রে এবং পরবর্তীতে তিনি বেবি টক ধারাবাহিকে নির্মাণ কর্মী, সিবিএস চ্যানেলের নাট্যধর্মী বডিজ অব এভিডেন্স ধারাবাহিকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা রায়ান ওয়াকার চরিত্রে সহ-অভিনেতা, এবং সিস্টার্স ধারাবাহিকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা জেমস ফ্যালকনার চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৮ সালে ক্লুনি হাস্যরসাত্মক ভীতিপ্রদ চলচ্চিত্র রিটার্ন অব দ্য কিলার টম্যাটোস এ অভিনয় করেন। ১৯৯০ সালে তিনি এবিসি চ্যানেলের পুলিশি নাট্যধর্মী সানসেট বিট স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন।এই সময়ে ক্লুনি বেভার্লি হিলস প্লেহাউজের একজন শিক্ষার্থী ছিলেন এবং সেখানে পাঁচ বছর অভিনয় বিষয়ে পাঠ গ্রহণ করেন।


আলোচিত সাফল্য: ১৯৯৪-১৯৯৯ক্লুনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত অ্যান্থনি এডওয়ার্ডস, জুলিঅ্যানা মার্গুলিস ও নোয়াহ ওয়াইলের সাথে এনবিসি টেলিভিশনের মেডিকেল নাট্যধর্মী ইআর ধারাবাহিকে ডক্টর ডগ রস চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে এই ধারাবাহিক ছেড়ে যাওয়ার পর তিনি এর ষষ্ঠ মৌসুমে ক্ষণিক চরিত্রে অভিনয় করেন এবং শেষ মৌসুমে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ধারাবাহিকে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেতার জন্য দুইবার প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তিনি ১৯৯৫,১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালে তিনবার নাট্য টিভি ধারাবাহিক অভিনেতার জন্য গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

ইআর ধারাবাহিক অভিনয় করাকালীন ক্লুনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। তার প্রথম বড় হলিউড চরিত্র ছিল ভীতিপ্রদ হাস্যরসাত্মক অপরাধ থ্রিলারধর্মী ফ্রম ডাস্ক টিল ডন। এটি পরিচালনা করেন রবার্ট রদ্রিগেজ এবং তার সাথে অভিনয় করেন হার্ভি কেইটেল। এই চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর তিনি মিশেল ফেইফারের বিপরীতে প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক ওয়ান ফাইন ডে এবং নিকোল কিডম্যানের বিপরীতে মারপিঠ-থ্রিলারধর্মী দ্য পিসমেকার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে ক্লুনি ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করনে। ছবিটি বক্স অফিসে অল্প পরিমাণ আয় করে, কিন্তু নেতিবাচক সমালোচনা লাভ করে এবং ক্লুনি নিজেই ছবিটিকে "অর্থের অপচয়" বলে উল্লেখ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি জেনিফার লোপেজের বিপরীতে অপরাধ-হাসরসাত্মক চলচ্চিত্র আউট অফ সাইট-এ অভিনয় করেন। এটি পরিচালনা করেন স্টিভেন সোডারবার্গ, যার পরিচালনায় ক্লুনি পরবর্তীতে আরও বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি তার ইআর ধারাবাহিকের চুক্তির শেষ সপ্তাহে থ্রি কিংস চলচ্চিত্রে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন।

ইআর পরবর্তী সাফল্য: ২০০০-২০০৫২০০৭ সালে জর্জ ক্লুনি গ্রম্যান্স চাইনিজ থিয়েটারে তার হাত ও জুতার ছাপ দিয়েছেন।ইআর ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পর ক্লুনি বিপর্যয়ধর্মী নাট্য চলচ্চিত্র দ্য পারফেক্ট স্ট্রর্ম (২০০০), কোয়েন ভ্রাতৃদ্বয় পরিচালিত রোমাঞ্চকর হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র ও ব্রাদার, হোয়ার আর্ট দো? (২০০০)-এ কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন। ছবি দুটি ব্যবসাসফল হয়। ২০০১ সালে তিনি স্টিভেন সোডারবার্গের পরিচালনায় ওশান্‌স ইলেভেন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এটি ১৯৬০ সালের একই নামের চলচ্চিত্রের পুনর্নির্মাণ। ক্লুনি এই ছবিতে ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার করা ড্যানি ওশান চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি ক্লুনির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা চলচ্চিত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র। ছবিটি বিশ্বব্যাপী ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। এই ছবির সফলতায় এর আরও দুটি অনুবর্তী পর্ব ওশান্‌স টুয়েলভ (২০০৪)ও ওশান্‌স থার্টিন (২০০৭)] নির্মিত হয়।

২০০৫ সালে ক্লুনি সিরিয়ানা চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেন। এটি সাবেক সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির এজেন্ট রবার্ট বেয়ারের মধ্য প্রাচ্যে তার কর্মজীবনের আত্মকথা অবলম্বনে নির্মিত। ক্লুনি এই চলচ্চিত্রের সেটে দুর্ঘটনার স্বীকার হন এবং মস্তিকে আঘাত পান। একই বছর তিনি গুড নাইট, অ্যান্ড গুড লাক চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন এবং এতে অভিনয় করেন। ছবিটি ১৯৫০-এর দশকে সিনেটর জোসেফ ম্যাকার্থির সাথে টেলিভিশন সাংবাদিক এডওয়ার্ড আর. মুরোর যুদ্ধের কথোপকথনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত। ২০০৬ সালে একাডেমি পুরস্কার আয়োজনে ক্লুনি সিরিয়ানা ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন এবং গুড নাইট, অ্যান্ড গুড লাক ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালনা ও শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
একজন বিনোদন তারকার সাফল্যের প্রকৃত স্বীকৃতিই হচ্ছে তার জনপ্রিয়তা আর খ্যাতি। কিন্তু এমন একটা সময় আসে এই জনপ্রিয়তা আর খ্যাতি তার বিড়ম্বনার কারণে পরিণত হয়। অভিনেতা জর্জ ক্লুনির ধারণা তিনি এমন অবস্থায়ই পড়েছেন। জর্জ ক্লুনি মনে করেন সংবাদ মাধ্যমের অতি-আগ্রহের কারণ তার কখনও কখনও শ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার মত অবস্থা হয়। তবে এই খ্যাতিকে তিনি বিশ্বব্যাপী অবিচার আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ার মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগিয়ে এই বিড়ম্বনা কাটাবার চেষ্টা করেন। 
৫৪ বছর বয়সী হলিউডের এই অভিনেতা ২০১৪ সালে আইনজীবী আমাল আলামুদ্দিনকে বিয়ে করার পর তার প্রতি মিডিয়ার আগ্রহ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। 
“খ্যাতিতে কিছু আকর্ষণীয় উপাদান আছে, তবে সব সময় ক্যামেরা যদি আপনাকে অনুসরণ করে তাহলে তা কখনও কখনও শ্বাসরুদ্ধকর মনে হতে পারে,” ক্লুনি গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ে এক সম্মেলনে বলেন।
“আমার মনে হল আমি যদি সে সব জায়গায় যাই আর ক্যামেরাকে আমাকে অনুসরণ করতে বাধ্য করি তাহলে সেসব মানুষ যারা এসব বিপজ্জনক কাজে কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাদের প্রচেষ্টা কয়েকগুণ কার্যকরী করা যেতে পারে,” তিনি আরও বলেন।

৩. কাইলি জেনার (মডেল)-১৬৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেবে ৫৭ বছর বয়সী মি: ক্লুনির গত বছরের জুলাই মাস থেকে এক বছরে ট্যাক্স-পূর্ব উপার্জন ছিল ২৩৯ মিলিয়ন ডলার। পৃথিবীর বিখ্যাত সেলেব্রিটিরা যে উপার্জন করেছেন সে তালিকায় মি: ক্লুনির অবস্থান দ্বিতীয় স্থানে।


কাইল জেনারছবির কপিরাইটPA
Image captionকাইলি জেনার ফ্যাশন গুরু হিসেবে পরিচিত।

কার্দাশিয়ান বোনদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট কাইলি জেনার আয়ের দিকে থেকে তৃতীয় স্থান দখল করেছেন। একটি বৃহৎ কসমেটিক কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পর তিনি আয়ের দিক থেকে তিন নম্বর অবস্থানে উঠে আসেন। একটি রিয়েলিটি শো এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁর ১১০ মিলিয়ন ফলোয়ার তাঁর আয় বাড়াতে কিছুটা সাহায্য করেছে। কাইল জেনার তাঁর অন্য বোনদের চেয়ে বেশি আয় করেন। ২০১৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় তিনি ৫৯তম অবস্থানে থাকলেও এবার তিন নম্বরে উঠে আসেন।

চিত্র:Kylie Jenner2 (cropped).png

কাইলি ক্রিস্টেন জেনার (জন্ম আগষ্ট ১০, ১৯৯৭) একজন মার্কিন রেয়ালেটি টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব, মডেল, অভিনেত্রী, উদ্যোক্তা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব এবং সামাজিক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। তিনি ৯ বছর বয়স থেকেই ই! টেলিভিশন চ্যানেলের রেয়ালেটি টেলিভিশন সিরিজ কিপিং আপ উইথ দ্য কার্দাশিয়ান্সএর একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবে সবার নিকট পরিচিত, তার নিজেস্ব ব্রান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী এবং তার সামাজিক গণমাধ্যমে তার অতিশয় উপস্থিতি জন্য তিনি বহুল পরিচিত। ২০১২ সালে, তিনি পোশাকের ব্রান্ড পেকসান এবং তার পাশাপাশি তার বোন কেনদ্রাল কে সাথে নিয়ে একটি ভিন্ন মাত্রার বস্ত্রের ব্রান্ড তৈরী করেন, যেটির নাম দেওয়া হয় "কেনদ্রাল এবং কাইলি"। ২০১৫ সালে কাইলি তার নিজেস্ব ব্রান্ডের প্রসাধনী ব্যান্ড "কাইলি কসমেটিক্স" শুরু করেন, ঐ অ্যাপটি আইটিউন্স অ্যাপ স্টোরে ১ম স্থানে উঠে আসে।
২০১৪ এবং ২০১৫ সালে, টাইম ম্যাগাজিন, সামাজিক গণমাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে তাদের যথেষ্ট প্রভাব থাকার কারনে "২০১৪ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী কিশোর-কিশোরী" তালিকায় জেনার এবং তার বোনদের নামের স্থান দেয়।২০১৭ সালের হিসেবে, ইন্ট্রাগ্রামে ১০৪ মিলিয়নেরও বেশি অনুসরণকারী নিয়ে, তিনি ইন্ট্রাগ্রামে সেরা ১০ জন অনুসরণীয় ব্যক্তিদের মধ্যে একজন।  ২০১৭ সালে, জেনারের নাম ফোর্বস সেলেব্রেটি ১০০ এর তালিকায় স্থান পায়, যেখানে তিনি সবচেয়ে কনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে এই তালিকায় নিজের স্থান করে নেন। ২০১৭ সালের ১১ই এপ্রিল, ঘোষনা করা হয় যে, কাইলি তার নিজেস্ব স্পিন-অফ বা ভিন্নধর্মী সিরিজ লাইফ অব কাইলির তারকা হিসেবে কাজ করবেন, যেটি এই বছরের আগষ্ট মাসেই ই! টেলিভিশনে পথম প্রচার করা শুরু হয়েছে
জেনারের জন্ম হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে। তিনি ১৯৭৬ সামার অলিম্পিক ডিকাঠ্লোন্ বিজয়ী চেটলিন জেনার এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ক্রিস জেনার এর সবচেয়ে কনিষ্ঠ মেয়ে। [ক] তার একজন বড় বোন আছে, যারর নাম, কেনদ্রাল। এবং তার বাবার দ্বিতীয় সংসারে তার আরও তিনজন সৎ বড় বোন রয়েছে, তারা হলেন, কোর্টনী, কিম এবং খোল, এবং তার, রব নামে একজন বড় ভাই রয়েছে। জেনারের আরো তিন জন সৎ বড় ভাই রয়েছে, যারা তার মায়ের আরেকটি সংসার থেকে এসেছেন, তারা হলেন বার্ট, ব্রেন্ডন, এবং ব্রোডী জেনার সবার শেষে "কেসি" নামে তার একটি সৎ বোন রয়েছে।

জেনার সিয়েরা কেনিয়ন স্কুল পড়াশোনা করেছিলেন, যেখানে তিনি উত্সাহদানকারী দলের একজন সদস্য ছিলেন। জেনার সেখানের সমাজিকভাবে আয়োজিত নাটকগুলির পাশাপাশি স্কুলে পড়ার সময়কালে সেখানে আয়োজিত নাটক গুলোতে অভিনয় করেছিলেন বলে দাবি করেন।  ২০১২ সালে, জেনার সিদ্ধান্ত নেন যে গৃহশিক্ষাই সবচেয়ে সেরা বিকল্প হবে এবং তিনি নিজেকে গৃহশিক্ষা কর্মসূচীর মধ্যে নথিভূক্ত করে নেন, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ওজাই শহরের লওরেল স্প্রিংস স্কুল থেকে হাই স্কুল সনন্দে স্নাতক পান।

কাইলি জেনার ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করলেই পকেটে পোরেন লাখো ডলার


মার্কিন মডেল কিম কার্দাশিয়ানের সৎবোন কাইলি জেনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যতম জনপ্রিয় তারকা। ছবি: ইনস্টাগ্রামমার্কিন মডেল কিম কার্দাশিয়ানের সৎবোন কাইলি জেনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যতম জনপ্রিয় তারকা। ছবি: ইনস্টাগ্রামসামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর কল্যাণে তারকাদের উপস্থিতি এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। বলতে পারেন আঙুলের ডগায়। তবে এই তারকারা আবার অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করেই পকেটে পোরেন কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ। ছবি পোস্টের পরেই লাখ ডলার পর্যন্ত আয় করেন তারকারা। তেমনই একজন মার্কিন মডেল কাইলি জেনার।
গত এপ্রিলে ইনস্টাগ্রামে কাইলি জেনার পোস্ট দিয়েছেন ১৫৬টি ছবি। ছবি: ইনস্টাগ্রামগত এপ্রিলে ইনস্টাগ্রামে কাইলি জেনার পোস্ট দিয়েছেন ১৫৬টি ছবি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বিজ্ঞাপন নিয়ে গবেষণা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠান কিছুদিন আগে জানায়, সেলেনা গোমেজ, কাইলি জেনার, রিয়ানা, বিয়ন্স নোলেসের মতো তারকারা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুধু একটি পোস্ট দিয়েই লাখ লাখ ডলার পর্যন্ত আয় করেন। কারণ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তারকাদের থাকে কোটি কোটি ভক্ত। এর অর্থ হলো তাঁদের যেকোনো পোস্ট কয়েক কোটি মানুষের কাছে পৌঁছায়। এটি যেকোনো পণ্যের প্রচারে অন্যতম বড় মাধ্যমও। আর তা ঘটছেও হরহামেশাই। তারকারা শুধু তো তাঁদের ব্যক্তিগত কাজকর্মের তথ্য হালনাগাদই করেন না, বিভিন্ন পণ্যের দূতিয়ালিও করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর ওই কাজ করেই এখন অনেকের চেয়ে অনেক বেশি আয় করেন কিম কার্দাশিয়ানের সৎবোন কাইলি জেনার। তিনি তাঁর প্রতি পোস্টের জন্য পকেটে পোরেন ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ ডলার। আর এটি বাংলাদেশের মুদ্রায় ৮ কোটি টাকার বেশি (১ ডলার সমান ৮৪ টাকা)।

এ বছরের ৪ মে পর্যন্ত ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে জেনারের ফলোয়ার সাড়ে ১৫ কোটির মতো। ছবি: ইনস্টাগ্রামএ বছরের ৪ মে পর্যন্ত ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে জেনারের ফলোয়ার সাড়ে ১৫ কোটির মতো। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সৌন্দর্যপণ্যের অন্যতম সম্রাজ্ঞী কাইলি জেনার। নানা পণ্যের মডেল হওয়ার কারণে তাঁকে ডাকা হয় ‘বিউটি মুঘল’ নামেও। গত এপ্রিলে ৩০ দিনে ইনস্টাগ্রামে কাইলি জেনার পোস্ট দিয়েছেন ১৫৬টি। এসব পোস্টে পাঠক সম্পৃক্ততা হয়েছে ১৮ কোটি ৬১ লাখের বেশি। এ বছরের ৪ মে পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম) জেনারের ফলোয়ার ১৫ কোটি ৪৭ লাখের ৭৫ হাজারের বেশি। দিনকে দিন তা বেড়েই চলেছে।

২০১৬ সালে স্ন্যাপচ্যাটে সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করা তারকা ছিলেন কাইলি জেনার। ফলোয়ারের দিক থেকে এ বছর তিনি ইনস্টাগ্রামে আছেন সাতে। শুধু ১ এপ্রিলেই ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার হয়েছেন ২৫ হাজার ৫৩০ জন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে এই মার্কিন মডেল তারকার সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ডলার। যার অনেকটাই আসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে।
মাত্র ২৫ বছর বয়সে মার্কিন মডেল কাইলি জেনারের সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ডলার। ছবি: ইনস্টাগ্রামমাত্র ২৫ বছর বয়সে মার্কিন মডেল কাইলি জেনারের সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ডলার। ছবি: ইনস্টাগ্রামকাইলির মূল্যের ধারণা পাওয়া যায় সম্প্রতি তাঁর এক টুইটে। কাইলির এক টুইটে কোটি কোটি ডলারের বাজারমূল্য কমে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘স্ন্যাপচ্যাটে’র। টুইটারে কাইলি লেখেন, ‘এমন কেউ কি আছেন, যিনি আর স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করছেন না? নাকি শুধু আমি একা? আহা এটা খুব দুঃখজনক!’ আর তাঁর এ টুইটে কমে যেতে শুরু করে স্ন্যাপচ্যাটের বাজারমূল্য। কমতে কমতে এক ধাক্কায় ১৩০ কোটি ডলার পর্যন্ত কমে যায় বাজারমূল্য


 জুডি শেইন্ডলিন (টিভি ব্যক্তিত্ব ও আইনজীবী)-১৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার


৪. জুডি শেইন্ডলিন- ১৪৭ মিলিয়ন ডলার


শেইন্ডলিনছবির কপিরাইটPA
Image caption২০১৭ সালে এক অনুষ্ঠানে কথা বলছেন জুডি শেইন্ডলিন

জুডি শেইন্ডলিন একজন মার্কিন প্রসিকিউশন আইনজীবী, সাবেক বিচারক, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব এবং প্রযোজক। এছাড়া তিনি একজন লেখকও বটে। ৭৫ বছর বয়সী মিস শেইন্ডলিন-এর আয় ১৪৭ মিলিয়ন ডলার। তিনি ২২টি সিরিজে টেলিভিশনের পর্দায় ছিলেন এবং প্রতিদিন এক কোটির বেশি মানুষ সে অনুষ্ঠান দেখেছে। ২০১৭ সালে তিনি তাঁর লাইব্রেরির মালিকানা ১০০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে উপার্জনের তালিকার তিনি উপরের দিকে উঠে আসেন।

৫. ডুয়েইন 'দ্য রক' জনসন - ১২৪ মিলিয়ন ডলার


ডাওনি 'দ্য রক' জনসনছবির কপিরাইটPA
Image captionডাওনি 'দ্য রক' জনসন

ডুয়েইন জনসন একজন রেসলার থেকে অভিনেতা হয়েছেন। তিনি 'দ্য রক' নামেও পরিচিত। গত বছর তাঁর ট্যাক্স-পূর্ব আয় ছিল ১২৪ মিলিয়ন ডলার । এর ফলে তিনি উপার্জনের দিক থেকে পঞ্চম স্থানে আছেন। ৪৬ বছর বয়সী 'দ্য রকের' উপার্জনের একটি বড় অংশ এসেছে অভিনয় সংশ্লিষ্ট আয় থেকে।

৬. ইউ টু - ১১৮ মিলিয়ন ডলার


বোনোছবির কপিরাইটPA
Image captionগতমাসে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে গান গাইছেন বোনো

আইরিশ রক ব্যান্ড দল ইউ টু তাদের প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে যে কনসার্টের আয়োজন করেছিল সেটি ব্যাপক অর্থ উপার্জন করেছে। সে কনসার্টের নাম ছিল 'দ্য জশুয়া ট্রি ট্যুর ২০১৭' এবং একই নামে অ্যালবামও বের করা হয়েছিল। ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা এবং উত্তর আমেরিকায় তারা ৫১ টি কনসার্ট আয়োজন করেছিল। সব মিলিয়ে তাদের আয় হয়েছিল ১১৮ মিলিয়ন ডলার।

৭. কোল্ডপ্লে - ১১৫.৫ মিলিয়ন ডলার


কোল্ডপ্লে'র ক্রিস মার্টিনছবির কপিরাইটPA
Image captionকোল্ড প্লে'র ক্রিস মার্টিন

রক ব্যান্ড দল কোল্ড প্লে হচ্ছে প্রথম ব্রিটিশ দল যারা এ তালিকায় স্থান পেয়েছে। ব্যান্ড দলটি গত বছর পাঁচটি মহাদেশে যে কনসার্ট করেছে এবং যে গানের অ্যালবাম বের করেছে সেটি বেশ ভালো উপার্জন করেছে। ফলে বিনোদন জগতে সর্বাধিক আয়ের তালিকায় দলটি সাত নম্বরে স্থান পেয়েছে।

৮. লিওনেল মেসি - ১১১ মিলিয়ন ডলার


লিওনেল মেসিছবির কপিরাইটPA
Image captionলিওনেল মেসি

২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে আর্জেন্টিনার ফুটবল সুপারস্টার লিওনেল মেসি তাঁর ক্লাব বার্সেলোনার সাথে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে। এর ফলে ক্লাবটি তাকে বেতন-বোনাস বাবদ ৮০ মিলিয়ন ডলার দেবে। ফলে লিওনেল মেসি এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার। এছাড়া অ্যাডিডাস এবং পেপসির মতো আরো কিছু বাণিজ্যিক ব্র্যান্ডের কাছ থেকে স্পন্সরশীপ বাবদ অনেক আয় করেন লিওনেল মেসি।

৯. এড শিরান


অ্যাড শিরানছবির কপিরাইটPA
Image captionঅ্যাড শিরান

ইংরেজ গায়ক এড শিরান হচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জনকারী একক গায়ক। ২৭ বছর বয়সী মি: শিরানের অ্যালবামটি ছিল ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি শ্রোতা প্রিয়।

১০. ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো


ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোছবির কপিরাইটREUTERS
Image captionক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো

এবারের বিশ্বকাপে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো সর্বাধিক গোলদাতাদের তালিকায় অন্যতম ছিলেন। এ বছর তিনি পঞ্চম বারের মতো ব্যালন ডি'অর খেতাব জয়লাভ করেছেন। স্পেনের রেয়াল মাদ্রিদে নয় বছর লোভনীয় সময় কাটানোর পর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ৯৯.২ মিলিয়ন পাউন্ডে ইটালির ক্লাব য়্যুভেন্তাসে যোগ দিতে যাচ্ছেন। খেলাধুলার সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নাইকির সাথে তার যে আজীবন চুক্তি রয়েছে সেটির মূল্য এক বিলিয়ন ডলার।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

The national flag Cambodia

world map

Schengen Visa Types & Validity- Visa Fees --Travel Insurance-statistics